Planning Exercise




তোমরা খুলনা কলেজের ছাত্র। এখন কলেজ ছুটি। তোমরা সবাই ঢাকার বাসিন্দা। তোমরা "জলকন্যা" নামে একটি মাঝারি লঞ্চে চড়ে ঢাকায় রওয়ানা হলে। তখন রাত ১১টা। আকাশ কিছুটা মেঘাচ্ছন্ন হলেও বিপদের কোনো আশঙ্কা ছিল না। লঞ্চের তিনটি কেবিনের মধ্যে তোমার এক বন্ধুর বৃদ্ধ মাতাকে চিকিৎসার জন্য ঢাকা নেওয়া হচ্ছে। তিনি কারো সাহায্য ব্যতীত চলাচল করতে পারেন না। লঞ্চে দু'জন আনসার রয়েছ। তোমরা সবাই লঞ্চের ডেকে রয়েছে। লঞ্চে প্রায় ১০০ জন নারী, পুরুষ ও শিশু রয়েছে। যার মধ্যে ৭০ জন নিচে ও ৩০ জন লঞ্চের উপরে রয়েছে। ১২টার সময় হঠাৎ ঝড় আরম্ভ হলো। প্রচণ্ড ঝড়ে লঞ্চটি সদরঘাট থেকে ৫ মাইল উত্তর-পশ্চিমে সদ্য জেগে উঠা চরে এসে আটকে গেল। চরে তেমন কোনো লোকবসতি নেই, তবে সদ্য প্রস্তুত একখানা তহসিলদারের অফিস আছে। হঠাৎ তুমি দেখলে নিচ থেকে একজন খালাসি "আগুন আগুন" বলে চিৎকার করছে। কাছে এসে দেখলে ইঞ্জিন রুমে ২ ব্যারেল তৈল আছে। অগ্নি নির্বাপণ যন্ত্রগুলো ৭ দিন ধরে অকেজো হয়ে আছে। কয়েকটি বালু ভর্তি বালতি রয়েছে। আরও আছে ১০টি লাইফ জ্যাকেট ও ৫ জন বহনকারী একটি নৌকা। এ সময় তোমরা দেখতে পেলে ২টি নৌকা ভরে কয়েকজন সন্দেহভাজন লোক তোমাদের দিকে আসছে। জানা গেছে রহিমপুরে কয়েকজন কুখ্যাত ডাকাতের বাড়ি আছে। এ এলাকায় কয়েকবার ডাকাতি হয়েছে। উদ্ধারকারী জাহাজটি বরিশাল সদরঘাটের ১ মাইল পূর্বে অবস্থিত এবং তাতে সংবাদ পাঠানোর কোনো ব্যবস্থা নেই। চরটির সোজা দক্ষিণে তীরের দূরত্ব ১ মাইল। তীরেই তালতলা থানা অবস্থিত। সেখানে একজন বন্দুকধারী গার্ড এবং একখানা টেলিফোন আছে। ঢাকা হতে বরিশালগামী এই লঞ্চটি রাত ১১টার সময় ঐ স্থান অতিক্রম করার কথা। তালতলা থানা পরিষদের দক্ষিণে তালতলা পুলিশ স্টেশন অবস্থিত। লঞ্চ চালকের রুমে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে। তোমাদের সাথে বরিশাল মেডিকেল কলেজের একজন ডাক্তার ছিলেন। লঞ্চটিতে চলার মতো খাদ্য ছিল।

সমস্যাবলি:

১. খালাসির গায়ের আগুন নিভানো এবং দাহ্য পদার্থ অপসারণ।

২. ইঞ্জিন রুমের আগুন নিভানো এবং দাহ্য পদার্থ অপসারণ।

৩. বন্ধুর বৃদ্ধ মাতাকে নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নেয়া এবং আহত মহিলা ও শিশুদের প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করা।

৪. সন্দেহভাজন লোকদের দিকে দৃষ্টি রাখা এবং দুষ্কৃতিকারী হলে তাদের প্রতিহত করা।

৫. লঞ্চটিকে উদ্ধার করা এবং নিরাপদ গন্তব্যে পৌছানো নিশ্চিত করা।


সমাধান:

১. প্রথমেই আমাদের যে কয়েকজন বন্ধু আছে তাদের কয়েকজন বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে যাব। দুজন কম্বল বা মোটা কাথা দিয়ে খালাসিকে জড়িয়ে ধরব। ফলে আগুন নিভে যাবে। এরপর তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করব। প্রয়োজনে ডাক্তারের সাহায্য নেব।

২. আমাদের কয়েকজন বন্ধু বালতির বালু ইঞ্জিন রুমে ছিটিয়ে দেব ফলে ইঞ্জিন-এর আগুন নিভে যাবে। একই সাথে আমরা ইঞ্জিন রুমের দাহ্য পদার্থগুলো সরিয়ে নেব।

৩. বন্ধুর বৃদ্ধ মাতাকেও আমরা নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নেব। মহিলা ও শিশুদের আমরা তহশিলদারের অফিসে নিয়ে যাব এবং যারা আহত হয়েছে তাদের আমরা প্রাথমিক চিকিৎসা দেব।

৪. চারজন বন্ধুকে নৌকায় করে তালতলা থানা পরিষদে পাঠাব। তারা সেখান থেকে টেলিফোনে তালতলা পুলিশ স্টেশনে এবং সদরঘাটে ঘটনা অবহিত করবে এবং সাহায্যের অবেদন জানাবে।

৫. অন্য দুজন বন্ধু বন্ধুকধারী দুজন আনসারসহ লঞ্চের ছাদে উঠে লঞ্চের সার্চ লাইট দিয়ে রহিমপুর হতে আসা দুষ্কৃতিকারীর নৌকা দুটির দিকে নজর রাখবে। যদি তারা দুষ্কৃতিকারী হয় তবে রাইফেল দিয়ে ফাঁকা আওয়াজ করবে। ফলে ওরা ভয়ে সহজে কাছে আসবে না। কিন্তু তারা জেলে হলে আমরা তাদের সাহায্য চাইব।

৬. ইতোমধ্যে থানা হতে পুলিশ এসে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করবে এবং ততক্ষণে উদ্ধারকারী জাহাজ চলে আসবে এবং যাত্রীদের নিয়ে নিরাপদে ঢাকা পৌঁছাবে।

৭. ঢাকা-খুলনাগামী লঞ্চ যখন ক্রস করবে তখন তাদের সাহায্য চাইব।