Group Discussion




Powered by Froala Editor

কৃষি উন্নয়নের মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব

Powered by Froala Editor

বাংলাদেশ নাতিশীতোষ্ণ দেশ। বাংলাদেশের আবওহাওয়ার জন্য ব্রিটিশরা ভারতবর্ষে এসেছিলো ব্যবসা করতে, লুট করতে। তারা জানত, এই অঞ্চলে চাইলে সোনা ফলানো যাবে। মোট কথা, এই দেশ কৃষি প্রধান দেশ। কিন্তু উন্নয়নের জোয়ারে বাংলাদেশ ক্রমেই শিল্পপ্রধান দেশ হয়ে উঠছে। চলতি বছরের অর্থনৈতিক খাতে কৃষির অবদান ছিলো তাই শিল্পক্ষেত্রের চেয়ে কম। এর অন্যতম কারণ হচ্ছে কৃষিতে বিনয়োগ কমে যাওয়া। কৃষিতে বিনিয়োগ কেবল খাদ্য নিরাপত্তার উন্নতি এবং টেকসই উন্নতির জন্য সবচেয়ে কার্যকরী কৌশল। এটি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্যও অপরিহার্য। 
 প্রাচীন কৃষি সমাজ থেকে আধুনিক জনসমাজে রূপান্তরিত হওয়ার এই প্রক্রিয়ায় বা আধুনিকায়নে, সনাতন সমাজের কৃষি অর্থনীতি যে অবদান রেখেছে তা নিঃসন্দেহে ধারণা করা যায়। কৃষি খাতের আধুনিকায়ন ও উৎপাদনশীলতা বাড়ানো ছাড়া অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়ন সম্ভব হতো না। কৃষির ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট, সমাজের শিল্পায়ন ও আধুনিকায়ন এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও সমাজের উন্নয়ন, পরস্পর নিবিড় সম্পর্কিত। তবে ১৯৫০ সালের পর থেকে কৃষি খাতকে অবহেলা করে শিল্পায়নের দিকে মনোযোগ দেয়া হয়। যা সফল ও হয়। কৃষিকাজ করে লোকসানের মুখ দেখা কৃষক তখন শিল্প প্রতিষ্ঠানে অধিক মজুরি পাওয়া শুরু করে। তবে ক্রমেই কৃষিকাজে অবহেলিত ও বঞ্চিত হওয়া কৃষক শ্রমিক হিসেবেও তার ন্যায্য থেকে বঞ্চিত হয়। যার ফলে ধনী আরো ধনী হয় এবং গরীব হয় আরো গরীব।
 ক্রমেই গড়ে ওঠা এই পুঁজিবাদ সমাজে সাম্যতা, অর্থনৈতিক উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে কৃষিখাতের অবদান অনস্বিকার্য। কৃষিখাতে দ্রুত উন্নতি সম্ভব কারণ অল্প বিনিয়োগে অধিক লাভ করা যায় যা শিল্পক্ষেত্রে কিছুটা কঠিনই বটে। একারণে বর্তমানে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে নতুন করে কৃষি নিয়ে আগানোর পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন দেখা যাচ্ছে।
 অপরদিকে, শিল্পখাতের উন্নয়নের সম্প্রসারণে বহির্বিশ্বের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। তবে কৃষিক্ষেত্রে বাংলাদেশ স্বয়ংসম্পূর্ণ। অধিক বিনিয়োগ, কৃষিকাজের সরঞ্জামের আধুনিকায়ন, কৃষকের প্রাপ্য পাওনা নিশ্চিতকরণ, দূর্নীতি রোধে সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করলে কৃষিখাতের অবদান বাংলাদেশের অর্থনীতিতে সবচেয়ে অধিক প্রতিপন্ন হবে।
  
 তবে উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর সাথে তাল মিলিয়ে চলতে গেলে বাংলাদেশকে পরিকল্পিত পরিবর্তন আনতে হবে সকল ক্ষেত্রে। মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) এখন উৎপাদন, পাইকারি ও খুচরা ব্যবসা, পরিবহন, কৃষি এবং নির্মাণ-এই পাঁচ খাতের অবদান ৬৭ শতাংশ। এছাড়া পোশাক শিল্প থেকে আসে জিডিপির একটি বড় অংশ। তুলনামূলক পিছিয়ে রয়েছে সেবা খাত। এই খাতেও উন্নয়ন প্রয়োজন। অপরদিকে কৃষিখাত অবদান রাখছে ১০ শতাংশের বেশি। অর্থাৎ কৃষিখাতে উন্নয়নের সুযোগ কাজে লাগাতে পারলে যার অবদান কমপক্ষে ২০ শতাংশ পার হয়ে যাবে। 
 বলা যায়, লোশন, শ্যাম্পু, ঘড়ি ছাড়া মানুষ একদিন বেঁচে থাকতে পারে কিন্তু খাদ্য ছাড়া একদিন ও না। এই মৌলিক চাহিদা পূরণে যখন বাংলাদেশের প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে তখন দেশের অর্থনীতির উন্নয়নে কৃষিখাতের ভূমিকা সবার আগে থাকা উচিত।

Powered by Froala Editor