Essay Writing




Powered by Froala Editor

বেকার সমস্যা

Powered by Froala Editor

অপার সম্ভাবনার এ দেশ। এখানে জন্ম নিয়েছেন অনেক জ্ঞানী-গুণী। তারা দেশের সঙ্গে বিশ্বকেও করে গেছেন সমৃদ্ধ। এখনও এ মাটির সন্তানেরা পৃথিবীর দেশে দেশে অনেক দায়িত্বপূর্ণ কাজ, যুগান্তকারী গবেষণায় ব্যস্ত। কিন্তু সেই দেশের তরুণ প্রজন্মের খবর কী? কিছু অংশ বাদ দিলে দেশের তরুণ সমাজের একটা বড় অংশই আজ নানাভাবে সংকটে নিমজ্জিত। পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জায়গায় তরুণরা পাচ্ছে না যথাযোগ্য মর্যাদা, কাজ ও মেধার যথার্থ সম্মান। বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশই তরুণ। এ দেশের কর্মসংস্থানেও তারুণ্যের ভূমিকা রয়েছে অসামান্য। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের মতে, তরুণ জনগোষ্ঠী সবচেয়ে বেশি ভারতে ৩৫ কোটি ৬০ লাখ, চীনে ২৬ কোটি ৯০ লাখ, ইন্দোনেশিয়ায় ৬ কোটি ৭০ লাখ, যুক্তরাষ্ট্র ৬ কোটি ৫০ লাখ, পাকিস্তানে ৫ কোটি ৯০ লাখ এবং বাংলাদেশে রয়েছে ৪ কোটি ৭৬ লাখ। এই তরুণরাই বাংলাদেশের সব ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখে চলেছে। ইতিহাস সৃষ্টি থেকে প্রতিটি স্তরে সেই তরুণ যুবকরাই জোগান দিয়েছিল। আজও বাংলাদেশের সব অভূতপূর্ব সৃষ্টিগুলোর জন্মই দেন তরুণরা। মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে দেশ গঠনেও তরুণদের ছিল ইতিবাচক ভূমিকা। কিন্তু বর্তমান তরুণ সমাজের বড় অংশই বেকার, অনিশ্চিত জীবনের পথে। যার কারণে অনেক তরুণ হতাশাগ্রস্ত হয়ে আত্মহত্যার পথেও হাঁটেন। আজ তরুণদের বড় একটি অংশ এ দেশের প্রতি মমত্ববোধ হারিয়ে ফেলেছে। যে কারণে আগের মতো স্বেচ্ছাশ্রম আর দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ তারুণ্য খুবই কম দেখা যায়। তারুণ্যের এই পশ্চাৎপদতার জন্য অনেকটা আমাদের দেশের অপরাজনীতিই দায়ী। তরুণদের রাজনীতি বিমুখতাও এ দেশের জন্য ভয়াবহ পরিস্থিতির জন্ম দিতে পারে। তরুণদের ওপর চালানো এক জনমত জরিপে দেখা যায়, প্রচলিত এই রাজনীতিকে আমাদের দেশের প্রায় ৬০ ভাগ তরুণ ছেলেমেয়ে পছন্দ করেন না। এ ক্ষেত্রে রাজনীতির নগ্ন রূপকেই তারা দায়ী করেন। তাদের কাছে রাজনীতির সংজ্ঞাটাই হলো ক্ষমতার ভাগাভাগি আর সুবিধাবাদ কেন্দ্রিক দলীয় চর্চা। তারা প্রচলিত রাজনীতিকে এ দেশের জন্য সবচেয়ে ক্ষতিকর দিক বলে উত্থাপন করেন। তরুণদের একটি অংশ রাজনৈতিক দুষ্টচক্রের প্রভাবে জড়িয়ে পড়ছে মৌলবাদ ও জঙ্গিবাদী কার্যক্রমের সঙ্গে। হলি আর্টিজানসহ বিভিন্ন ঘটনা আমাদের মাঝে এক ভংকর আতঙ্ক এবং অস্থিরতা সৃষ্টি করে দিয়েছে। বাংলাদেশের অসাম্প্রদায়িকতাকে ধ্বংস করার আরেকটি চক্রান্ত হলো এই জঙ্গিবাদী আগ্রাসন। কিন্তু এসবের পরিত্রাণ তেমন মেলেনি। তরুণ প্রজন্মকে এই আগ্রাসন থেকে রক্ষা করবে কে? কীভাবে এরা এই আগ্রাসন থেকে মুক্তি পাবে, সেটা আমাদের সবার জানা বিষয়। এবার শুধু রাষ্ট্রকে এটা নিয়ে ভাবতে হবে। বাংলাদেশে একসময় সবচেয়ে মেধাবী তরুণ ছেলেমেয়েরাই রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হতেন। সবচেয়ে মেধাবীরা সমাজে নানা ধরনের স্বেচ্ছাশ্রমের দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করতেন। একইভাবে সমাজও তাদের এই কাজের স্বীকৃতি দান করত। যে কারণে মেধাবীদের জায়গা সমাজের সর্বস্তরে ছিল। গান, কবিতা, আবৃত্তি, নাচ, খেলাধুলা, সাহিত্য আড্ডা, ছাত্ররাজনীতি সব কিছুতে তাদের ছিল প্রধান বিচরণ ক্ষেত্র। কিন্তু বর্তমান সময়ে আমাদের দেশের সব ক্ষেত্রে চরম দৈন্যতা লক্ষণীয়। না আছে খেলার মাঠ, না আছে পৃষ্ঠপোষক, না আছে সাহিত্য-আড্ডা, না সুস্থ ধারার সাংস্কৃতিক আন্দোলন।   প্রগতিশীল রাজনীতিও আগের মতো শক্তিশালী নয়। যে কারণে সমাজের সব ক্ষেত্রেই জেঁকে বসেছে সুবিধাবাদ, ভোগবাদ আর আত্মকেন্দ্রিকতা। আর এর সব কিছুকেই বাংলাদেশের তারুণ্য ধারণ করছেন। অন্যদিকে রাষ্ট্র ও সরকার তরুণদের সঠিক মূল্যায়ন করছে না। যার কারণে তারা চলে যাচ্ছেন দেশের বাইরে। আজকের তরুণরা দেশকে নিয়ে অনেক চিন্তা করছেন। প্রতিনিয়ত দেশের খবরা-খরব জানতে চেষ্টা করেন তারা। কিন্তু প্রশাসন, রাষ্ট্র তরুণদের নিয়ে কতটা ভাবে? বর্তমান তরুণ প্রজন্ম কাজে বিশ্বাস করে, কথায় নয়। আজ আমাদের দেশে গড় তরুণ বেকারের সংখ্যা অন্যান্য দেশের তুলনায় অধিক। এই বেকার তরুণদের চিন্তাচেতনা আর বুদ্ধি যদি কাজে লাগাতে পারে রাষ্ট্র, তবে বাংলাদেশ পরিণত হবে সোনার বাংলায়। দেশকে এগিয়ে নিতে হলে তরুণ সমাজের বিকল্প নেই। আজকের তরুণরাই আগামী দিনে দেশ পরিচালনা এবং বড় বড় কাজের নেতৃত্ব দেবে। এখন থেকে যদি তরুণদের দক্ষ করে গড়ে তোলা যায়, তবে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ আরো সুন্দর হবে। তাই দেশ গঠনে তরুণদের চাওয়াকে যেমন গুরুত্ব দিতে হবে, ঠিক তেমনি তাদের পর্যাপ্ত সুযোগও দিতে হবে। আজ দেশে লাখ লাখ শিক্ষিত বেকার তরুণ যুবসমাজ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। যাদের চাইলে দেশের উন্নয়নে কাজে লাগাতে পারে সরকার। এ বিষয়ে সোচ্চার হতে হবে তরুণ সমাজকে। তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে তরুণরা যত বেশি  পড়ালেখা করছে, তাদের তত বেশি বেকার থাকার ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) আঞ্চলিক কর্মসংস্থান নিয়ে এক প্রতিবেদনেও এই চিত্র উঠে এসেছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের উচ্চশিক্ষিতদের মধ্যে বেকারত্বের হার সবচেয়ে বেশি পাকিস্তানে ১৬ দশমিক ৮ শতাংশ। বাংলাদেশে এ হার ১০ দশমিক ৭ শতাংশ, যা এ অঞ্চলের ২৮টি দেশের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। দেশে তরুণদের বিশেষত শিক্ষিত তরুণদের এক বৃহদাংশ বেকার জীবনযাপন করছে এবং সেটা বেড়েই চলছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর জরিপ বলছে, ২০১৩-১৪ ও ২০১৪-১৫ দুই বছরে মাত্র ছয় লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে অথচ এই সময়ে প্রতি বছর দেশের কর্ম বাজারে প্রবেশ করেছে প্রায় ২৭ লাখ মানুষ। অর্থাৎ মাত্র দুই বছরে বেকারের সংখ্যা বেড়েছে ৪৮ লাখ। অথচ ২০০৩ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর চাকরি বা কাজ পেয়েছে ১৩ লাখ ৮০ হাজার মানুষ।   বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ শ্রমশক্তি জরিপ ২০১৬-১৭ এর হিসাব বলছে, দেশে কর্মক্ষম বেকারের সংখ্যা ২৭ লাখ। প্রতিষ্ঠানটির হিসাব অনুযায়ী, দেশে শ্রমশক্তির মোট পরিমাণ ৫ কোটি ৬৭ লাখ। এর মধ্যে কাজ করছে ৫ কোটি ৫১ লাখ ৮০ হাজার জন। এর অর্থ বেকারের সংখ্যা মাত্র ২৬ লাখ ৮০ হাজার। বাংলাদেশে শিক্ষিত বেকারের হার সবচেয়ে বেশি। প্রতি ১০০ জন স্নাতক ডিগ্রিধারীর মধ্যে ৪৭ জনই বেকার। অর্থাৎ প্রতি দুইজনে একজনের নাম বেকারের খাতায় অন্তর্ভূক্ত।   অন্যদিকে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশে বেকারের সংখ্যা ৩ কোটি। প্রতিষ্ঠানটি আভাস দিয়েছে, কয়েক বছরে তা দ্বিগুণ হয়ে ৬ কোটিতে দাঁড়াবে, যা মোট জনসংখ্যার ৩৯ দশমিক ৪০ শতাংশ হবে। আইএলওর হিসাবটিকেই পর্যবেক্ষকেরা বাংলাদেশের প্রকৃত বেকারের সংখ্যা বলে মনে করেন। উচ্চমাধ্যমিক পাসের পর কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যতটা আগ্রহী, কারিগরি বা কর্মদক্ষতা বাড়ানোর শিক্ষা নিতে তরুণরা ততটা আগ্রহী নন। দ্বিতীয়ত, খুব কম ক্ষেত্রেই কাউকে উদ্যোক্তা হতে দেখা যায়। সবাই চাকরির প্রত্যাশা করেন, কেউ চাকরি সৃষ্টির কথা ভাবেন না। ফলে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করে চাকরির আশায় দীর্ঘ সময় ধরে অপেক্ষা করা এখন সাধারণ বিষয়। সরকারের উচিত বছর বছর নতুন প্রতিষ্ঠান না করে সঠিক জায়গায় বিনিয়োগ করে দক্ষ জনসম্পদ ও উদ্যোক্তা তৈরিতে জোরালো ভূমিকা রাখা। ২০১৬ সালে ইউরোপীয় ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (ইআইইউ) এক পরিসংখ্যানে দেখিয়েছে, বাংলাদেশে শতকরা ৪৭ ভাগ গ্র্যাজুয়েট হয় বেকার, না হয় তিনি যে কর্মে নিযুক্ত এ জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েট হওয়ার কোনো প্রয়োজন ছিল না। প্রতি বছর বাংলাদেশে ২২ লাখ কর্মক্ষম মানুষ চাকরি বা কাজের বাজারে প্রবেশ করছেন। এই বিশালসংখ্যক কর্মক্ষম মানুষের মাত্র সাত শতাংশ কাজ পাবেন। এর অর্থ হচ্ছে, দুই-তৃতীয়াংশ মানুষ বেকারের তালিকায় নাম লেখাচ্ছেন।   দরিদ্র সমাজে চারিত্রিক ও মানসিক; জ্ঞান ও বুদ্ধিবৃত্তিক উন্নতি করতে হলে সত্যিকারের শিক্ষা নিতে হবে। দৃষ্টি করতে হবে প্রসারিত। ক্ষুদ্র গণ্ডির মধ্যে আবদ্ধ না থেকে বিশ্বের বিশালতায় উন্মুক্ত করতে হবে নিজেদের। আর আনন্দ মনে তরুণরা এগিয়ে গেলে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ।

Powered by Froala Editor

See More

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সশস্ত্র বাহিনীর ভূমিকা

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সশস্ত্র বাহিনীর ভূমিকা অতুলনীয় গুরুত্বপূর্ণ ছিল। মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের স্বাধীনতা প্রাপ্তির জন্য বাংলাদেশী জনগণ অসংখ্য বিপর্যস্ততা এবং শোষণের মুখোমুখি হয়েছিল। এই প্রতিযোগিতার মধ্যে, সশস্ত্র বাহিনীর উপস্থিতি একটি মহান ভূমিকা রাখত।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে, বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব প্রাপ্তির লক্ষ্যে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি ও অবস্থান অনুযায়ী প্রতিকূল প্রতিস্পর্ধা করেছিলেন। তারা প্রথমতঃ গুপ্তচর কর্মসূচিগুলি চালিয়েছিলেন, যেগুলি মুক্তিবাহিনীর গতিপথের গোপন থাকতো এবং শত্রুদের প্রাক্তনের উপায়ে নিয়ন্ত্রণ অনুমোদন দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ছিল। পরে তারা মুক্তিবাহিনীর সদস্যরা বিভিন্ন সাংগঠনিক ও যুদ্ধবিশেষ কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেছিলেন, সর্বোচ্চ সংগঠন হিসাবে মুক্তিযুদ্ধে তারা গঠনমূলক ভূমিকা রাখেন। তাদের উদ্যোগে, মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব প্রাপ্তির লক্ষ্য অত্যন্ত মহান সাফল্যে চূড়ান্ত হয়।

See More

Powered by Froala Editor

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সুফল ও কুফল

Powered by Froala Editor

বর্তমান বিশ্বে তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর এক আধুনিক বিশ্বে পরিণত হয়েছে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অভাবনীয় পরিবর্তন এনেছে। এটি মানুষের সামাজিক ক্ষেত্রে যেমন সুফল বয়ে এনেছে তেমনি কিছু কুফলও রয়েছে। চলুন তাহলে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সুফল ও কুফল সম্পর্কে জেনে নেই।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সুফল
1. তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার যেকোনো ধরনের অপচয় রোধ করে।
2. এর প্রয়োগের মাধ্যমে যেকোনো কাজে আগের চাইতে অনেক কম সময় লাগে অর্থাৎ এর মাধ্যমে সময় সাশ্রয়ী ব্যবস্থা তৈরি করা যায়।
3. এর ব্যবহার ও চর্চার ফলে ক্রমান্বয়ে সর্ব ক্ষেত্রে দক্ষতা বৃদ্ধি পায়।
4. এর ব্যাপক প্রসারের ফলে যে কোন তথ্যের প্রাপ্যতা এখন সহজ হয়েছে। বিশেষ করে ইন্টারনেটের মত প্রযুক্তির কল্যাণে এখন বিশ্বটাকে পাওয়া যাচ্ছে হাতের মুঠোয়।
5. এর উৎকর্ষতার কারণে এখন তাৎক্ষণিক যোগাযোগ সম্ভব হচ্ছে। ফেক্স, ইন্টারনেট, ই-মেইল ,এসএমএস, এমএমএস ইত্যাদি এর উৎকৃষ্ট উদাহরণ।
6. ভিডিও কনফারেন্সিং এর মাধ্যমে মতামত আদান-প্রদান করা যায়।
7. ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে অনেক সাফল্য বয়ে এনেছে।
8. শিল্প প্রতিষ্ঠানে এর ব্যবহার মনুষ্য শক্তির অপচয় কমায়।
9. শিক্ষাক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহৃত হচ্ছে।
10. যোগাযোগ ব্যবস্থাকে সহজতর, দ্রুত, নিরাপদ এবং আরামদায়ক করেছে।
11. ঘরে বসেই চিকিৎসকদের কাছ থেকে সেবা নেওয়া যাচ্ছে।
12. অনেক কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে ইত্যাদি।


তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির কুফল
1. অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
2. ইন্টারনেটে এমন কিছু অশ্লীল সাইট রয়েছে যেগুলোর মাধ্যমে মানুষের নৈতিক স্থলন ঘটতে পারে।
3. এর ফলে প্রযুক্তিগত সুবিধা এখন এতটাই বেড়েছে যে এর অপব্যবহার করে ব্যক্তির গোপনীয়তা প্রকাশ হয়ে পড়ছে।
4. বেকারত্ব সৃষ্টি হচ্ছে।
5. অতিরিক্ত এর ব্যবহারের ফলে নানা রকম শারীরিক সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে।
6. এর ব্যবহারের ফলে সব ধরনের সমস্যার সমাধান সহজে পাওয়ার কারণে চিন্তা ও গবেষণার মাধ্যমে নতুন কিছু আবিষ্কার হতে মানুষ দূরে থাকবে। ফলে আমাদের সমাজ ও জাতি মেধাবী প্রজন্ম হতে বঞ্চিত হবে।
7. অনেক সময় মিথ্যা প্রচারণা করে নানা রকম সমস্যার সৃষ্টি করে ইত্যাদি।

Powered by Froala Editor

See More

Powered by Froala Editor

মেট্রোরেল

Powered by Froala Editor

বাংলাদেশ একটি ছোট দেশ। তবে এই দেশ টি ঘনবসতিপূর্ণ জনবহুল দেশ হওয়ার কারণে এখানে যানজট একটি বড় সমস্যা। সেই সমস্যা সমাধানের জন্য সরকার মেট্রোরেল প্রকল্পের কাজ শুরু করেন। বাংলাদেশে মেগা প্রকল্প গুলোর মধ্যে মেট্রোরেল একটি। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাকে যানজট মুক্ত করতে সরকার এই পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। যা সাধারণ মানুষের জন্য আর্শীবাদ।

মেট্রোরেল একটি বৈদ্যুতিক যান। এই মেট্রোরেল প্রকল্পের বাস্তবায়নের জন্য খরচ হয়েছে ২১হাজার ৯৮৫ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। তার মধ্যে জাইকা দিবে ৭৫% এবং বাকি টা দিবেন সরকার। এটি উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত চলাচল করবে।  তার মধ্যে ১৬টি স্টেশন থাকবে। এই পথটি প্রায় ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ হবে। যেহেতু এটি যানজট রোধ করার জন্য করা হয়েছে সেহেতু এই মেট্রোরেলের পথ হবে উড়ালসড়ক। এর মধ্যে প্রথম পর্যায়ে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ৯টি স্টেশন থাকবে। এই স্টেশন গুলো হলো উত্তরা দক্ষিণ, উত্তরা সেন্টার, পল্লবী, আইটেমটি, মিরপুর-১০, ফার্মগেট, তালতলা, কাজীপাড়া, আগারগাঁও ।

এছাড়াও বিজয় সরণি, সোনারগাঁও, জাতীয় স্টেডিয়াম, জাতীয় জাদুঘর, দোয়েল চত্বর, বাংলাদেশ ব্যাংক এসকল স্টেশন গুলো থাকবে। প্রতিটি ট্রেনে মোট ৬টি করে বগি থাকবে। উত্তরা থেকে মতিঝিল রুটে চলবে ১৪টি ট্রেন। এই ট্রেন টি ১৫০০ জনের মতো যাত্রী বহন করতে পারবে। এই ট্রেনে আসন সংখ্যা রয়েছে ৯৪২ টি এবং ৫৭৪ জন যাত্রী দাঁড়িয়ে ভ্রমণ করতে পারবেন। প্রতিটি বগি বেশ প্রশস্ত এবং শীততাপ নিয়ন্ত্রিত । প্রতিটি ট্রেন ৪০মিনিট পর পর ছাড়বে। যার গতি হবে ঘন্টায় ৩২ কিলোমিটার এবং এক স্টেশন থেকে অন্য স্টেশন যেত সময় লাগবে ৩৫ মিনিট। প্রতিটি স্টেশনে ৪০ সেকেন্ড করে থামবে। এই ট্রেনের ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে সর্বনিম্ন ২০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১০০টাকা পর্যন্ত।

এই ট্রেনটি সকল ঢাকাবাসীর সুবিধা কথা ভেবে তৈরি করা হয়েছে। শহরের বাসিন্দাদের জন্য একটি দ্রুত পরিবহন গামী যান। এটি শুধু ট্রাফিক সমস্যার সমাধান করবে তাই নয় বায়ু ও শব্দ দূষণ কমাতেও সাহায্য করবে। এমনকি হাজার হাজার মানুষের কর্ম সংস্থান হবে। এটি শুধু শহরের বাসিন্দাদের উপকারে আসবে তাই নয় দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের ধারাতে বিশেষ ভূমিকা রাখবে।

Powered by Froala Editor

See More

Powered by Froala Editor

খাদ্য নিরাপত্তা ও আমাদের সরকারের ভূমিকা

Powered by Froala Editor

দুর্যোগে ও পরবর্তী সময়ে দেশের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তায় নতুন করে বেশ কিছু উদ্যোগ ও কার্যক্রম হাতে নিয়েছে সরকার। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের আওতায় এগুলো বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এসব উদ্যোগ বাস্তবায়নে এরইমধ্যে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবের (প্রশাসন) নেতৃত্বে সংস্থা প্রধান ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার সমন্বয়ে মনিটরিং কমিটি এবং অতিরিক্ত সচিবের (বাজেট ও অডিট) নেতৃত্বে মনিটরিং সহায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। তবে এই খাদ্য নিরাপত্তার আওতায় শুধুমাত্র ধান, চাল ও গম সংরক্ষণের বিষয়টি রয়েছে।

খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বর্তমান সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর দেশের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ২০২১ সালের মধ্যে সরকারি পর্যায়ে খাদ্যশস্য ধারণ ক্ষমতা ২৭ লাখ মেট্রিক টনে উন্নীত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। এজন্য সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা এবং রূপকল্প-২০২১ এর সঙ্গে সমন্বয় করে দেশে আধুনিক খাদ্য গুদাম ও সাইলো নির্মাণের কার্যক্রম গ্রহণ করায় বর্তমানে দেশে সরকারি পর্যায়ে খাদ্যশস্য সংরক্ষণের বিদ্যমান ধারণক্ষমতা প্রায় ২১ লাখ ৭২ হাজার মেট্রিক টনে উন্নীত হয়েছে। আরও প্রায় ৫ লাখ ৮৬ হাজার মেট্রিক টন ধারণ ক্ষমতার আধুনিক খাদ্য গুদাম ও সাইলো নির্মাণের লক্ষ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি প্রকল্প বর্তমানে বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। এছাড়া খাদ্যশস্যের সংরক্ষণ ক্ষমতা বাড়ানো এবং বিদ্যমান গুদামের ধারণ ক্ষমতা বজায় রাখতে নতুন উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
সারাদেশে ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে সরকারের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে দেড় লাখ মেট্রিক টন ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন নতুন খাদ্য গুদাম নির্মাণ প্রকল্পের কাজ চলছে। প্রকল্পের আওতায় সারাদেশের ৮টি বিভাগে ৫৪টি জেলার ১৩১টি উপজেলায় নতুন এক হাজার মেট্রিক টনের ৪৮টি ও ৫০০ মেট্রিক টনের ১১৪টি খাদ্য গুদাম নির্মাণের জন্য নির্ধারিত আছে। এরইমধ্যে এই প্রকল্পের ৮২ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে।
দুর্যোগে এবং দুর্যোগ পরবর্তী সময়ে দেশে খাদ্য সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্যে খাদ্য মজুত ক্ষমতা বাড়াতে ‘আধুনিক খাদ্য সংরক্ষণাগার নির্মাণ’ প্রকল্পটি প্রায় দুই হাজার কোটি ব্যয়ে জানুয়ারি ২০১৪ থেকে ২০২০ মেয়াদে বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। দেশের ৮টি কৌশলগত স্থান- চট্টগাম, আশুগঞ্জ, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, মধুপুর, ময়মনসিংহ, বরিশাল এবং মহেশ্বরপাশায় ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন ধারণ ক্ষমতার ৮টি আধুনিক স্টিল সাইলো (গুদাম) নির্মাণ করা হবে। এরইমধ্যে এগুলোর ৪০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। এই প্রকল্পের আওতায় দেশের দুর্যোগপ্রবণ ১৯ জেলার ৬৩ উপজেলায় ৫ লাখ পারিবারিক সাইলো বিতরণ কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে।
সারাদেশে পুরাতন খাদ্য গুদাম মেরামত এবং নতুন অবকাঠামো নির্মাণেও একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। প্রায় ৩১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০১৮ থেকে ২০২১ মেয়াদে এই প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। প্রকল্পটির আওতায় দেশের ৬২ জেলার ২১৪ উপজেলায় খাদ্য অধিদফতরের ২৩৭ স্থাপনায় প্রায় ৩ লাখ ২১ হাজার মেট্রিক টন ধারণ ক্ষমতার ৫৫০টি খাদ্য গুদাম মেরামত ও ২০টি নতুন অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে।
নিরাপদ খাদ্যের জন্য বাংলাদেশে খাদ্য সুরক্ষার প্রাতিষ্ঠানিকীকরণে ৪৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নেওয়া হয় একটি প্রকল্প। এ প্রকল্পের আওতায় নিরাপদ খাদ্য আইন, ২০১৩ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের ৫ বছরের কৌশলগত পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে। এছাড়া নিরাপদ খাদ্য আইন বাস্তবায়নের জন্য জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
নতুন উন্নয়ন প্রকল্প ও কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে সারাদেশে পাঁচ হাজার মেট্রিক টন ধারণক্ষমতা সম্পন্ন ২০০টি প্যাডিসাইলো (ধানের গুদাম) নির্মাণ করা হবে। খাদ্যশস্যের পুষ্টিমান নিশ্চিত করার লক্ষ্যে “প্রিমিক্স কার্নেল মেশিন ও ল্যাবরেটরি স্থাপন এবং অবকাঠামো নির্মাণের প্রকল্পটি এরইমধ্যে একনেকে পাস হয়েছে।
এসডিজি (সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোলস) বাস্তবায়নের লক্ষ্যে পরিকল্পনা কমিশন এসডিজি ম্যাপিং তৈরি করেছে। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মপরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হয়েছে। জিরো হাঙ্গার বা ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশ বাস্তবায়নে অতি দরিদ্র ৫০ লাখ পরিবারের মধ্যে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি চালু রয়েছে। সরকারি পর্যায়ে খাদ্য গুদামের ‘ফুড লস’ কমানোর লক্ষ্যে কাজ চলছে।
দুর্যোগে ও সংকটে খাদ্যপণ্যের নিরাপত্তা নিয়ে সরকারের উদ্যোগের বিষয়ে জানতে চাইলে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, লোকজন মনে করেন খাদ্যপণ্য মানেই খাদ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে। পেঁয়াজও আমাদের। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। আমরা শুধু নিরাপদ খাদ্যের বিষয়ে আমরা সকল খাদ্যের মালিক। যাকে আমরা বলি ফুড সেফটি। এখানে আমরা সব ফুডে আছি। আরেকটা হচ্ছে ফুড সিকিউরিটি। দু’টো ভিন্ন জিনিস। এই ফুড সিকিউরিটিতে থাকে দানাজাতীয় খাদ্যশস্য চাল ও গম। এ দু’টোতে আছি। আমরা এগুলো নিয়ে কাজ করি। সরকার যে কার্যপ্রণালী বিধিমালা করেছে সেখানে কোন মন্ত্রণালয় কী কাজ করবে সেটা বলা আছে। বাজারে কীভাবে চাল ও গম পর্যাপ্ত করা যায় সেই কাজটা আমরা করি। সেজন্য নানা উদ্যোগ হাতে নেওয়া হয়েছে। সেগুলোর কাজ এগিয়ে যাচ্ছে। যথাসময়ে সেসব কাজ শেষ হবে বলেও মনে করেন তিনি।

Powered by Froala Editor

See More

Powered by Froala Editor

নারীর ক্ষমতায়ন

Powered by Froala Editor

ক্ষমতায়ন বলতে বোঝায় যে কোনো মানুষ অর্থাৎ নারী-পুরুষ উভয়ই নিজের জীবনকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, নিজস্ব বিষয়গুলো নির্ধারণ করে, দক্ষতা অর্জন করে, আত্মবিশ্বাস বাড়ায়, সমস্যার সমাধান করে এবং আত্মনির্ভরশীলতা তৈরি করে।

ষাট ও সত্তর দশকের দিকে নারীদের ওপর অর্থনৈতিক উন্নয়নের বিবিধ নেতিবাচক প্রভাবের পরিপ্রেক্ষিতে ক্ষমতায়ন বিষয়টির উদ্ভব ঘটে। জাতিসংঘের মতে, ‘নারীর ক্ষমতায়ন এমন একটি প্রক্রিয়া যার দ্বারা নারী কল্যাণ, সমতা এবং সম্পদ আহরণের সমান সুযোগ অর্জনের লক্ষ্যে লিঙ্গ বৈষম্য অনুধাবন, চিহ্নিতকরণ ও বিলোপ সাধনের জন্য একজোট হওয়া।’ নারী উন্নয়ন ও ক্ষমতায়ন বলতে বোঝায় ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক ইত্যাদি ক্ষেত্রে ব্যক্তির অধিকার এবং রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক সর্বজনীনতা সংরক্ষণ করে আত্মশক্তিতে বলীয়ান হয়ে নারীর স্বাধীন ও সার্বভৌম সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা নিশ্চিত করা।

নারী ও পুরুষের পারস্পরিক নির্ভরশীলতাই সৃষ্টির বৈশিষ্ট্য। গোটা পৃথিবীর জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক অংশই নারী। আবহমানকাল থেকে নারী ও পুরুষের হাত ধরেই পৃথিবী সভ্যতার পথে এগিয়ে চলছে। সভ্যতার এ অগ্রযাত্রায় নারী ও পুরুষের উভয় অংশের অবদানই কোনো অংশে কম নয়। কাজী নজরুল ইসলাম বলেছেন, ‘নারী সৃষ্টির আধার, প্রাকৃতিক, জৈবিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক বা সাংস্কৃতিক পরিবর্তনের ইতিবাচক রূপান্তরে বা বিবর্তনের ধারাবাহিকতায় নারী জড়িয়ে আছে আবহমানকাল থেকেই।’

পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থায় যুগ যুগ ধরেই নারীসমাজ শোষিত ও অবহেলিত হয়ে আসছে। ধর্মীয় গোঁড়ামি, সামাজিক কুসংস্কার, নিপীড়ন ও বৈষম্যের বেড়াজালে নারীদের সর্বদা রাখা হয়েছে অবদমিত। নারীদের মেধা ও শ্রমশক্তিকে সমাজ ও দেশ গঠনে সম্পৃক্ত করা হয়নি। নারীদের সঠিক মূল্যায়ন ও যথাযথ সম্মান দেয়া হয়নি। এছাড়া নারীর উন্নয়ন ও ক্ষমতায়নে গ্রহণ করা হয়নি কোনো যুগোপযোগী পদক্ষেপ। অথচ মানুষের মৌলিক প্রয়োজনগুলো পূরণ করতে পুরুষের পাশাপাশি সহায়তা করে নারী। এটি কোনো একমুখী প্রক্রিয়া নয় বরং দ্বিপক্ষীয় প্রক্রিয়া। তাই দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের লক্ষ্যে নারীর সার্বিক উন্নয়ন ও ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করা জরুরি।

বাংলাদেশের সংবিধানে নারীর অধিকার ও মৌলিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করার বিধান সন্নিবেশিত হয় ১৯৭২ সালে। সংবিধানের ২৮(১) ধারায় উল্লেখ করা হয়েছে, ‘কেবল ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ, নারী-পুরুষভেদে বা জš§স্থানের কারণে কোনো নাগরিকের প্রতি রাষ্ট্র বৈষম্য প্রদর্শন করবে না।’ ২৮(২) ধারায় বলা হয়েছে, ‘রাষ্ট্র ও গণজীবনের সর্বস্তরে নারী-পুরুষের সমান অধিকার লাভ করবেন।’ ২৮(৪)-এ উল্লেখ আছে, ‘নারী বা শিশুদের অনুকূলে কিংবা নাগরিকদের কোনো অনগ্রসর অংশের অগ্রগতির জন্য বিশেষ বিধান প্রণয়ন হতে এই অনুচ্ছেদের কোনো কিছুই রাষ্ট্রকে নিবৃত্ত করবে না।’ ২৯(১)-এ রয়েছে, ‘প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োগ বা পদ লাভের ক্ষেত্রে সকল নাগরিকের জন্য সুযোগের সমতা থাকবে।’ ৬৫(৩) ধারায় নারীর জন্য জাতীয় সংসদে আসন সংরক্ষিত রাখা হয়েছে এবং এ ধারার অধীনে স্থানীয় শাসনসংক্রান্ত প্রতিষ্ঠানসমূহে নারীর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা হয়েছে।

আশার কথা হচ্ছে, নারীর ক্ষমতায়নে বিশ্বের অন্যতম দেশ বাংলাদেশ। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম কর্তৃক প্রণীত বৈশ্বিক জেন্ডার গ্যাপ সূচকে বাংলাদেশ বিশ্বের প্রথম সারির দেশগুলোর সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে। ২০২২ সালে বাংলাদেশের ব্যাংকিং ছিল ৭১তম, যা দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সর্বোচ্চ। বাংলাদেশ পৃথিবীর মধ্যে একমাত্র দেশ, যেখানে বিগত ৫০ বছরে নারী সরকারপ্রধান সবচেয়ে বেশি সময় ক্ষমতায় ছিল (২৭ বছর)। মানব উন্নয়ন, প্রত্যাশিত গড় আয়ু বৃদ্ধি, প্রজনন হার হ্রাস, শিশুমৃত্যুর হার হ্রাস, মাতৃমৃত্যুর হার হ্রাস, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষায় জেন্ডার সমতা অর্জন, বৈশ্বিক ক্ষুধা সূচক এবং সর্বোপরি মাথাপিছু আয়ে ও সামাজিক গুরুত্বপূর্ণ সূচকে প্রতিবেশী ভারত ও পাকিস্তানকে পেছনে ফেলেছে বাংলাদেশ।

বেইজিং নারী উন্নয়ন কর্মপরিকল্পনায় নারী উন্নয়নের লক্ষ্যে যে ক্ষেত্রগুলো চিহ্নিত হয়েছে তার একটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যভিত্তিক বাস্তবায়ন কৌশল প্রণয়নের লক্ষ্যে ও বেইজিং ঘোষণা বাস্তবায়নের অঙ্গীকারের ফলে বাংলাদেশের মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি, ২০১১ ও কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করে, যার প্রধান লক্ষ্য হলো নির্যাতিত ও অবহেলিত এ দেশের বৃহত্তম নারী সমাজের ভাগ্যোন্নয়ন করা।

সমাজ অগ্রগতির গুরুত্বপূর্ণ সূচক শিক্ষার হার, নারীর ক্ষমতায়ন, চিকিৎসা ক্ষেত্রে উৎকর্ষ অর্জন এবং অবাধ সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড। নারীর ক্ষমতায়ন প্রকাশিত হয় নারীদের রাজনীতিতে অংশগ্রহণ, কর্মক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণের হার, অবনমিত মাতৃমৃত্যু ও বাল্যবিবাহের হার দ্বারা। একবিংশ শতাব্দীতে নারীর ক্ষমতায়ন একটি আন্তর্জাতিক বিষয়। নারীর ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রগুলো হলো পারিবারিক, সামাজিক সক্ষমতায় রাজনৈতিক, প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডে, অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রায় পরিকল্পনা প্রণয়নে, সিদ্ধান্ত গ্রহণে, শিক্ষামূলক কর্মকাণ্ডে, গবেষণামূলক কর্মকাণ্ডে, সৃজনশীল উদ্ভাবনীতে সেবা সার্ভিস ইত্যাদিতে।

অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য নারীর ক্ষমতায়ন একটা অপরিহার্য অংশ। জাতীয় উন্নতির কর্মকাণ্ডে নারীকে বাদ দিয়ে কোনোভাবেই উন্নয়ন সম্ভব নয়। রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে নারীরা অগ্রসর হলেও নারীর সার্বিক অগ্রগতি ও অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নে আরও জোড় দিতে হবে। বাল্যবিবাহ (৫৪ শতাংশ) রোধসহ মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষায় নারীদের অধিকতর অংশগ্রহণের সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। নারীর প্রতি সহিংসতা রোধ ও সর্বক্ষেত্রে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। ঘর থেকে বাহির এবং রাষ্ট্রীয় কর্মকাণ্ডে সর্বত্রই নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। নারীর ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কালজয়ী পঙ্ক্তি ‘বিশ্বে যা কিছু মহান সৃষ্টি চির কল্যাণকর, অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর’Ñএটাই আমাদের অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে কাজ করুক।

সবশেষে নারী ও পুরুষের সম্মিলিত প্রয়াসই আদর্শ সমাজ গঠনের একমাত্র অবলম্বন।

Powered by Froala Editor

See More

Powered by Froala Editor

অনলাইন ব্যবসা সম্ভাবনা ও সমস্যা

Powered by Froala Editor

বর্তমানে অন্যতম আলোচিত ও সবার আকর্ষণের বিষয়বস্তু হলো ই-কমার্স। জীবনে নতুন মাত্রা যোগ করেছে এটি। এর যাত্রা শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সবাই নতুনত্বের সংস্পর্শে এসেছেন। দুই দশক আগেও বাংলাদেশে ই-কমার্সের তেমন ব্যাপকতা ছিল না, কিন্তু বর্তমানে খরচ ও সময় কম হওয়ার কারণে সবাই ই-কমার্সের দিকে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। ই-কমার্স ধারণাটি আমাদের সবার কাছে পরিচিত। অনলাইনের মাধ্যমে আমরা যখন কোনো পণ্য কেনাবেচা করি, তখন তাকে ই-কমার্স বলে।

করোনা পরিস্থিতিতে এর প্রসার বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। শাটডাউনের ফলে ধাপে ধাপে দোকানপাট সবকিছু বন্ধ করে রাখার কারণে সবার একমাত্র অবলম্বন হয়ে উঠেছে ই-কমার্স। পরিস্থিতি এমন হয়েছে যে একজন ব্যবসায়ী এখন নিজস্ব দোকান বা শপিং মল থাকার পরেও ই কমার্সের মাধ্যমে পণ্য বিক্রি করছেন। ই-কমার্স মূলত সব ব্যবসায়ীর জন্য অবশ্যপালনীয় একটি বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ই-কমার্সের পথযাত্রা ও বর্তমান বাস্তবতা বিবেচনা করলেই বাংলাদেশের সম্ভাবনা সম্পর্কে ধারণা করা যায়।

বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ই-কমার্স সম্ভাবনাময় দিক উম্মোচন করেছে। দেশের অর্থনীতির সমৃদ্ধি, বিকাশ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে এটা ইতিবাচক দিক। ঘরে বসে অল্প কিছু সময়ের মধ্যে পণ্য ক্রয়-বিক্রয় করার সুবিধা থাকায় বিক্রেতারা যেমন লাভবান হচ্ছেন, ক্রেতাদেরও সরাসরি বাজারে গিয়ে পণ্য ক্রয় করতে হচ্ছে না। প্রায় প্রতি বছর দ্বিগুণ হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে অর্থনীতিতে এ খাতের অবদান। বাংলাদেশে ই-কমার্সের সম্ভাবনার আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো কর্মসংস্থান সৃষ্টি। করোনা পরিস্থিতিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকাসহ মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। বেকারত্বের পরিমাণও বৃদ্ধি পেয়েছে। উচ্চশিক্ষার সঙ্গে সম্পৃক্ত শিক্ষার্থীসহ যারা করোনার কারণে চাকরি হারিয়েছেন বা কর্মসংস্থান হারিয়েছেন, তারা ই কমার্সের সঙ্গে যুক্ত হয়ে বেকারত্ব নামক অভিশাপের অবসান ঘটাতে সক্ষম হয়েছেন।

নতুন নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি হচ্ছে। বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে এই সেক্টরে উদ্যোক্তা হওয়ার প্রবণতা বেশি লক্ষ করা যায় এবং তাদের কাজের সফলতাও আশানুরূপ হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে যেসব তরুণ-তরুণী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে দূরে সরে ঘরে বসে অনায়াসে দিন যাপন করছিলেন এবং যাদের মাথায় ছিল অনেক চিন্তার ভার, তারা ওই উদ্যোক্তার খাতায় নাম লেখাচ্ছেন। কেননা জীবনের এই পর্যায়ে এসে পরিবারের দায়িত্ব নেয়া এবং বাবা-মায়ের পাশে অর্থনৈতিক সহায়ক হিসেবে থাকা মধ্যবিত্ত সন্তানদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। ই-কমার্স করোনা পরিস্থিতিতে এসব শিক্ষার্থীর সম্বল হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর ফলে আমাদের দেশের সম্ভাবনার হার অনেক বেশি এবং যদি এই ই-কমার্সের প্রসার আগামী দিনগুলোয় আরও বৃদ্ধি করা যায় এবং সবার মাঝে ছড়িয়ে দেয়া যায়, তাহলে অর্থনৈতিকভাবে যে বিরাট পরিবর্তন আসবে সেটা সত্যিই সবার জন্য একটা সুখবর।

ই-কমার্স বলতে শুধু অনলাইনে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কেনাকাটা বোঝায় না, এটা দ্বারা অনলাইনে কেনাকাটা, ওয়েবডিজাইন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, ডিজিটাল মার্কেটিং ও ফেসবুকে কেনাকাটা সবই বোঝায়। ই-কমার্সের ওপর সবার এই নির্ভরতার অন্যতম কারণ হলো পণ্যের সহজলভ্যতা ও পণ্য সম্পর্কে বিশদ তথ্য। পণ্য সম্পর্কে কোনো তথ্য না জেনে আমরা সশরীরেও সেই পণ্যটি কিনতে আগ্রহ প্রকাশ করি না। আর এখানে যেহেতু প্রশ্ন অনলাইনে কেনাকাটার, তাই পণ্য সম্পর্কে সঠিক তথ্য যাচাই করা একটা বড় বিষয়, যে সুবিধা আমরা ই-কমার্সের কাছ থেকে পেয়ে থাকি। এই বিশ্বাসযোগ্যতার কারণেই মানুষ ই-কমার্সের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে। যেমনভাবে বিক্রেতারা তাদের সঠিক তথ্য দিয়ে পণ্যটি বিক্রি করতে সক্ষম হচ্ছেন, ঠিক তেমনিভাবেই একজন ক্রেতা সঠিক তথ্য জানা এবং যাচাই করার মাধ্যমে সেটা ক্রয় করার একটা আস্থাভাজন জায়গা খুঁজে পাচ্ছেন।

এমন অনেক পণ্য আছে যেগুলো সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানি না। যেহেতু ই-কমার্স চালু হওয়ার আগে আমাদের কোনো জিনিসের প্রয়োজন হলে সেটা সম্পর্কে আমরা সশরীরে তথ্য যাচাই করতাম, তাই আমাদের অজানা অনেক পণ্য থেকে যেত। এমন পণ্যগুলো সম্পর্কে আমরা এখন ই-কমার্সের মাধ্যমে খুব সহজেই জানতে পারছি। ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে দূরত্ব অনেক বড় একটা বিষয়। প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে একজন মানুষের যদি কোনো পণ্যের প্রয়োজন হয়, সেটা রাজধানী ঢাকা শহরে এসে ক্রয় করা তার পক্ষে যতটা কঠিন ছিল, এখন সেটা অনায়াসে সে ক্রয় করতে পারে। ই-কমার্সের সুবাদে এসব মানুষের জন্য এক নতুন জগতের দ্বার উšে§াচিত হয়েছে।

যদি কর্মসংস্থানের কথা বলা হয়, তাহলে ই-কমার্স এক্ষেত্রে অনেক বড় অবদান রাখছে। বিগত কয়েক বছরে ই-কমার্সের মাধ্যমে যে পরিমাণ কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে, সেটা অভাবনীয় বিষয়। নতুন করে কর্মসংস্থান হয়েছে ৫০ হাজার মানুষের। মূলত ই-কমার্সের প্রতি মানুষের নির্ভরশীলতার আরও একটি দিক হলো করোনাকালে ক্রেতাদের চাহিদা বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহ করা। নিত্যপণ্য ও খাদ্যসামগ্রী ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো ক্ষেত্র বিশেষে ৩০০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। যদি বিগত বছরগুলোর দিকে একটু লক্ষ করি তাহলে দেখতে পাব, ২০১৯ সালেও দেশে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবসার প্রবৃদ্ধি ছিল মাত্র ২৫ শতাংশ। ২০২০ সালে এসে সেই প্রবৃদ্ধি ৭০ থেকে ৮০ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। এ বছর দেশের বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠিত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের ব্যবসা বহুগুণ বেড়ে গেছে গত বছরে তুলনায়। অর্জিত সুনাম, অভিজ্ঞতা ও দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে তারা গ্রাহকদের জন্য মানসম্মত, উন্নত ও দ্রুত সেবা নিশ্চিত করছে। ই-কমার্স ব্যবসায়ীদের সংগঠন ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ জানিয়েছে, ২০২০ সালের শেষ আট মাসে (এপ্রিল থেকে ডিসেম্বর) ই-কমার্সে শুধু নিত্যপণ্য লেনদেন হয়েছে তিন হাজার কোটি টাকার। বর্তমানে প্রতিদিন এক লাখ ৬০ হাজারের বেশি ডেলিভারি দিতে হচ্ছে বিভিন্ন ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানকে।

এতগুলো দিক বিবেচনার পরেও মনে প্রশ্ন আসতে পারে, বাংলাদেশে ই-কমার্সের সম্ভাবনা কতটা? ই-কমার্সের মধ্যে অনেকে সংশয় ও সফলতা থাকলেও বাস্তবতা বলছে, এখানে ই-কমার্সের সম্ভাবনা অনেক দূর পর্যন্ত প্রসারিত। আগামী দিনগুলো অনেক সম্ভাবনাময় ই-কমার্সের জন্য। বলা যায়, এ দেশের খুচরা ব্যবসার সিংহভাগ ক্রমেই ই-কমার্সের আওতায় চলে আসবে, এমনকি করপোরেট ব্যবসারও অনেক কিছু। বিষয়টা এমন নয় যে, ই-কমার্স জগতে কেউ না জেনে বুঝে প্রবেশ করে সফলতা অর্জন করছে। কিছু সংশয় রয়েছে যেটার নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে, তবে এগুলো কাটিয়ে উঠে যদি যথাযথ পদক্ষেপের মাধ্যমে সফলতা অর্জনের এই পর্যায়কে আরও উন্নত করা যায়, তাহলে এটার সম্ভাবনা আমাদের দেশে সর্বোচ্চ হবে। ই-কমার্সের ক্ষেত্রে যে ঘাটতি রয়েছে সেটি হলো, সরকার কর্তৃক প্রদত্ত পর্যাপ্ত ও কার্যকর নীতিমালা, যেটা সবার কাছে গ্রহণযোগ্য ও নির্ভরশীলতার পরিচয় হবে। এই নীতিমালা গ্রহণের পর সেটা বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশে ই-কমার্সের যে সম্ভাবনা রয়েছে, তা অর্জন করা সম্ভব হবে।

Powered by Froala Editor

See More

Powered by Froala Editor

খাদ্য উৎপাদন ও বাংলাদেশ

Powered by Froala Editor

খাদ্য উৎপাদনে নীরব বিপ্লব বাংলাদেশকে বিশ্বমঞ্চে ঈর্ষণীয় পর্যায়ে উন্নীত করেছে। কৃষিজমি কমতে থাকা, জনসংখ্যা বৃদ্ধিসহ জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বন্যা, খরা, লবণাক্ততা ও বৈরী প্রকৃতিতেও খাদ্যশস্য উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে উদাহরণ।

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) তথ্যানুযায়ী, সবজি ও মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে তৃতীয়। ধান ও আলু উৎপাদনে যথাক্রমে চতুর্থ ও সপ্তম অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। এছাড়া বন্যা, খরা, লবণাক্ততা ও দুর্যোগসহিষ্ণু শস্যের জাত উদ্ভাবনেও শীর্ষে বাংলাদেশের নাম। স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশে ধানের উৎপাদন তিন গুণেরও বেশি, গম দ্বিগুণ, সবজি পাঁচ গুণ এবং ভুট্টার উৎপাদন বেড়েছে দশ গুণ।

দুই যুগ আগেও দেশের অর্ধেক এলাকায় একটি ও বাকি এলাকায় দুটি ফসল হতো। বর্তমানে দেশে বছরে গড়ে দুটি ফসল হচ্ছে। সরকারের যুগোপযোগী পরিকল্পনা, পরিশ্রমী কৃষক এবং মেধাবী কৃষিবিজ্ঞানী ও সম্প্রসারণবিদদের যৌথ প্রয়াসেই এ সাফল্য। আর এভাবেই প্রধান খাদ্যশস্যের উৎপাদন বাড়ানোর ক্ষেত্রে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় দেশের তালিকায় উঠে এসেছে বাংলাদেশ।

খাদ্য উৎপাদনে বাংলাদেশের সাফল্যকে বিশ্বের জন্য অনুকরণীয় উল্লেখ করে অর্থনীতিবিদ ড. মোস্তফা কামাল মুজেরী বলেন, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার গবেষণা পর্যালোচনা করলে এটা স্পষ্ট যে, বাংলাদেশ এখন খাদ্য উৎপাদনে বিশ্বের জন্য উদাহরণ।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে কৃষির প্রচুর সম্ভাবনা রয়ে গেছে। সেসব সম্ভাবনা ব্যবহার করা প্রয়োজন। কৃষিকে আধুনিকায়ন করতে হবে। একরপ্রতি উৎপাদন আরও বাড়াতে হবে। ব্যবহার করতে হবে উন্নত প্রযুক্তি। শুধু কৃষি উৎপাদন বাড়ানোর উদ্যোগ নিলেই চলবে না, কৃষিপণ্যের ন্যায্য দাম নিশ্চিত করতে হবে। কৃষককে ভর্তুকিসহ উন্নত সার ও বীজের নিশ্চয়তা দিতে হবে। এজন্য প্রয়োজন দেশে কৃষিভিত্তিক শিল্পের ওপর জোর দেয়া।

প্রাকৃতিক উৎসের মাছে বাংলাদেশ বিশ্বে তৃতীয় : প্রাকৃতিক উৎস থেকে মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ বর্তমানে বিশ্বে তৃতীয়। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষিবিষয়ক সংস্থা এফএও প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। চীন ও ভারত যথাক্রমে এক ও দুই নম্বর অবস্থানে আছে। দুই বছর আগে প্রাকৃতিক উৎসের মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল পঞ্চম। দ্য স্টেট অব ফিশ অ্যান্ড অ্যাকুয়াকালচার-২০১৮ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে দেখা যায়, চাষের ও প্রাকৃতিক উৎসের মাছ মিলিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান এখন চতুর্থ। চার বছর ধরে বাংলাদেশ এ অবস্থানটি ধরে রেখেছে। আর শুধু চাষের মাছের হিসাবে বাংলাদেশ পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে।


সবজি উৎপাদনে তৃতীয় : দেশে রীতিমতো সবজি বিপ্লব ঘটে গেছে গত এক যুগে। জাতিসংঘের কৃষি ও খাদ্য সংস্থার তথ্যমতে, সবজি উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে তৃতীয়। এক সময় দেশের মধ্য ও উত্তরাঞ্চল এবং দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যশোরেই কেবল সবজির চাষ হতো। এখন দেশের প্রায় সব এলাকায় সারা বছরই সবজির চাষ হচ্ছে। এখন দেশে ৬০ ধরনের ও ২০০টি জাতের সবজি উৎপাদিত হচ্ছে। বর্তমানে ১ কোটি ৬২ লাখ কৃষক পরিবার রয়েছে, এ কৃষক পরিবারগুলোর প্রায় সবাই কমবেশি সবজি চাষ করেন।

ধান উৎপাদনে বিশ্বে চতুর্থ :
আমন, আউশ ও বোরো মৌসুমে ধানের বাম্পার ফলনে বছরে প্রায় সাড়ে তিন কোটি টন উৎপাদনের রেকর্ড গড়েছে বাংলাদেশ। বিশ্বে গড় উৎপাদনশীলতা প্রায় তিন টন। আর বাংলাদেশে তা ৪ দশমিক ১৫ টন। এফএও’র তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালে বাংলাদেশে প্রায় ৩ কোটি ৫৩ লাখ টন ধান উৎপাদন হয়েছে, যা বিশ্বে চতুর্থ। এ সময় ১৪ কোটি ১৩ লাখ টন নিয়ে শীর্ষ রয়েছে চীন। ১১ কোটি ৩৫ লাখ টন নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে অবস্থান করছে ভারত এবং ৪ কোটি ৪৭ লাখ টন নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে ইন্দোনেশিয়া।

আলু উৎপাদন বিশ্বে সপ্তম : এক দশক আগেও দেশে আলুর উৎপাদন ছিল অর্ধ লাখ টনের নিচে। এখন তা প্রায় এক কোটি টনের কাছাকাছি। এ সাফল্য বাংলাদেশকে এনে দিয়েছে আলু উৎপাদনকারী শীর্ষ দশ দেশের কাতারে। স্বীকৃতিটি দিয়েছে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও)। সংস্থাটির তথ্য অনুয়ায়ী, ৮৩ লাখ টন আলু উৎপাদন নিয়ে বাংলাদেশ বিশ্বে সপ্তম স্থানে অবস্থান করছে। ৮ কোটি ৮৪ লাখ টন আলু উৎপাদনে বিশ্বে শীর্ষস্থানে রয়েছে চীন। ৪ কোটি ২৩ লাখ টন নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ভারত। এরপর রাশিয়া (৩য়), ইউক্রেন (৪র্থ), যুক্তরাষ্ট্র (৫ম), জার্মানি (ষষ্ঠ)। উৎপাদনে বিস্ময়কর সাফল্যই কেবল নয়, আলু এখন দেশের অন্যতম অর্থকরী ফসলও। মাধ্যম হয়ে উঠেছে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনেরও।

Powered by Froala Editor

See More

Powered by Froala Editor

জাতিসংঘ

Powered by Froala Editor

Details

Powered by Froala Editor

See More

Powered by Froala Editor

বাংলাদেশের সামাজিক ও নৈতিক অবক্ষয়

Powered by Froala Editor

মানসিক বিকাশ ও নৈতিক চরিত্র গঠনে সামাজিক মূল্যবোধ ও পারিবারিক সুশিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম। মূলত মায়ের কোলে শিশুর শিক্ষার হাতেখড়ি। পরিবার থেকেই শিশু প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করে। ফলে পরিবার মানব সন্তানের প্রথম শিক্ষা নিকেতন। সন্তানের মূল্যবোধ, চরিত্র, চেতনা ও বিশ্বাস জন্ম নেয় পরিবার থেকেই। বাবা-মা যেমন আদর্শ লালন করেন, তাদের সন্তানরাও সেটা ধারণ ও লালন করার চেষ্টা করে। পরিবার হলো প্রেম-প্রীতি ভালোবাসা ও মায়া-মমতায় ভরা এমন একটি সুসজ্জিত বাগানের মতো যেখানে প্রতিটি সদস্য তার চারিত্রিক গুণাবলি বিকশিত করার পর্যাপ্ত সুযোগ পায়। নৈতিক গুণাবলিসমৃদ্ধ হয়ে তারা পারিপার্শ্বিক পরিবেশকে সুশোভিত ও মোহিত করে। এটা এমন এক নিরাপদ আশ্রয়স্থল যা বাইরের যাবতীয় পঙ্কিলতা ও আক্রমণ থেকে শিশুসন্তানকে সুরক্ষিত রাখতে সক্ষম। 

Powered by Froala Editor

See More