তুমি একটি ক্লাবের সভাপতি। দুপুর ২টায় তুমি ক্লাবের একটি জরুরি কাজে সভা আহ্বান করেছ। সকলেই নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বেই এসে হাজির হয়েছ। তুমি আসার সময় দেখলে পিডিবি অফিসের "Executive Engineer" তার ব্যক্তিগত গাড়িটি নিয়ে বেরিয়ে গেলেন। সেখানে অন্য একটি গাড়ি আছে ব্যবহারের জন্য। সভা নির্দিষ্ট সময় শুরু হলো, এমন সময় একজন লোক এসে খবর দিল যে বালিকা বিদ্যালয়ে আগুন লেগেছে। আগুন নিচতলা হতে ২য় তলায় ওঠার সিঁড়িতে লেগেছে। ফলে উপরের তলার মেয়েরা নিচ তলায় নামতে পারেনি এবং ভয়ে চিৎকার করছে। নতুন Gateman নিয়োগ করা হয়েছে। এই Gateman খুব সতর্ক এবং Train আসার পনেরো মিনিট পূর্বেই রেল ক্রসিং-এর গেট বন্ধ করেছেন। বেলা আড়াইটায় গাড়ি আসবে। PDB অফিসে একটি টেলিফোন আছে সেটি অধিকাংশ সময় খারাপ থাকে। কাছেই একটা ছেলেদের হোস্টেল আছে।
সমস্যাবলি:
১. অগ্নিদগ্ধ মেয়েদের গায়ের আগুন নিভানো এবং তাদের হাসপাতালে প্রেরণ করা।
২. দোতলায় আটকে পড়া মেয়েদের উদ্ধার করা।
৩. ছাত্রী হোস্টেলে আগুন নিভানো এবং তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
সমাধান:
১. প্রথমেই আমরা সভা স্থগিত ঘোষণা করব। ক্লাবে কোনো সাইকেল বা মোটর সাইকেল থাকলে তার সাহায্য নেব, না থাকলে আমাদের মধ্যে যে দুইজন ভালো দৌড়াতে পারে তাদের একজনকে পুলিশ স্টেশনে অপরজনকে বালক হোস্টেলে পাঠাব। তারা সেখান হতে হাসপাতালে ফায়ার ব্রিগেড ও Level Crossing-এর Guard room-এ ফোন করে দুর্ঘটনার কথা জানাবে। নিশ্চিত করার জন্য PDB হতে গাড়ি নিয়ে Guard room-এ যাব। দু'বন্ধু Guard room-এর Gate man-কে অনুরোধ করব যেন অ্যাম্বুলেন্স ও ফায়ার ব্রিগেডের গাড়ি ছেড়ে দেন। স্টেশনে ফোন করব যাতে ট্রেন না ছাড়ে।
২. একজন PDB অফিসে যাব এবং Girls' School-এর বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দিতে বলব যাতে বড় দুর্ঘটনা এড়ানো যায়। ৩. আমরা অন্য কয়েকজন বন্ধু দ্রুত ছাত্রী স্কুলে যাব এবং নিকটস্থ পুকুর হতে পানি দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে রাখব। যাবার সময় PDB অফিস থেকে একটি লম্বা মই নিয়ে যাব এবং আটক মেয়েদের হাসপাতালে নিয়ে যাব এবং উপযুক্ত চিকিৎসা প্রদান করব।
৪. ফায়ার স্টেশন হতে উদ্ধারকর্মীরা গাড়িসহ এসে আগুন নিভাবে। পুলিশ স্টেশন হতে পুলিশ এসে যাবে ও ছাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।
৫. আমরা আবার আমাদের স্থগিত সভা পুনরায় শুরু করব।
নাটোর রাজশাহী মহাসড়কটি পূর্ব-পশ্চিমে বিস্তৃত। মহাসড়ক হতে উত্তর দিকে দুটি ও দক্ষিণ দিকে একটি রাস্তা গিয়েছে। পশ্চিম দিকের রাস্তাটির মাথায় একটি হাসপাতাল রয়েছে। পূর্বদিকের রাস্তার মাথায় ফায়ার ব্রিগেড অবস্থিত। নাটোর রাজশাহী মহাসড়কের পশ্চিম প্রান্তে একটি থানা অবস্থিত। দক্ষিণ দিকের রোডটি কলেজ রোড। কলেজ রোডের পশ্চিমে কলেজ হোস্টেল ও অধ্যক্ষের বাসা অবস্থিত। তবে অধ্যক্ষের বাসায় না থাকার সম্ভাবনাই বেশি। কলেজ রোডের পূর্বপ্রান্তে আগুন লাগা বাড়িটি অবস্থিত। এ বাড়িতে দালান করা দুইটি টিনের ঘর রয়েছে। নতুন একটি বিল্ডিং তৈরি হয়েছে। ঘরের পিছনে একটি ছনের পাকঘর রয়েছে এবং সাথেই একটি গোয়াল ঘর আছে। গোয়াল ঘরে ৬টি গরু আছে। বাড়ির পিছনে একটি পুকুর আছে। পুকুরের পাশে ধানক্ষেত রয়েছে। ধানক্ষেতে সেচের জন্য একটি পাম্প রয়েছে। পাকের ঘরে ১টিন কেরোসিন ও বড় ঘরে ৪টি ডিজেল ও ২টি পেট্রোলের ড্রাম আছে। তোমার ছোট ভাইয়ের মটর সাইকেলটি বড় ঘরে ছিল। ঘরের মধ্যে একটি সিন্দুকে মূল্যবান সামগ্রী, কাগজপত্র, দলিল, স্বর্ণালংকারসহ নগদ বিশ হাজার টাকা রয়েছে।
তোমরা তিন ভাই, দুই বোন, মা ও বাবাকে নিয়ে বাড়িতে বাস করছ। তোমার বাড়িতে একজন কাজের লোক ও একজন পাম্প মেশিন চালক রয়েছে। বিকাল ৫টায় তোমার চাচা তার দু'ছেলেকে নিয়ে বেড়াতে গেলেন। তোমরা সবাই গল্প গুজব করছ। হঠাৎ কাজের ছেলে রান্না ঘর থেকে আগুন আগুন বলে চিৎকার করতে লাগল। তুমি দেখলে তোমার ছোট বোনের গায়ে আগুন লেগে গেছে। ঘরে অসুস্থ বৃদ্ধ পিতা রয়েছেন। তিনি অন্যের সাহায্য ছাড়া চলতে পারেন না। তোমার চাচাত দু'ভাই ভয় পেয়ে দৌড়ে পালিয়ে গেল। চিৎকার শুনে তোমার ৫ বন্ধু সাহায্যের জন্য হোস্টেল থেকে আসল। এদিকে সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসছে।
সমস্যাবলি:
১. আমার ছোট বোনকে আগুন হতে উদ্ধার ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।
২. রান্নাঘরের আগুন নিভানো এবং দাহ্য পদার্থ অপসারণ করা।
৩. অসুস্থ পিতাকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে হবে।
৪. ঘরের মূল্যবান সামগ্রী, দলিলপত্র, স্বর্ণালংকার নগদ ২০ হাজার টাকা ইত্যাদি রক্ষা করা।
৫. বাড়ির নিরাপত্তা রক্ষা করা।
৬. গরুকে রক্ষা করতে হবে।
সমাধান:
১. একজনকে (ভাই) কাথা বা কম্বল দিয়ে বোনকে জড়িয়ে ধরে তার গায়ের আগুন নেভাব এবং প্রয়োজনে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর হাসপাতালে পাঠাব।
২. ৩ জন ছেলেকে (বন্ধু/ভাই) পাকের ঘর হতে কেরোসিন, ডিজেল ও পেট্রোল নিরাপদ স্থানে সরাতে বলব।
৩. এক বন্ধুকে মোটর সাইকেলযোগে অধ্যক্ষের বাড়ি পাঠাবো থানা, হাসপাতাল ও ফায়ার ব্রিগেডে ফোন করার জন্য। ফোন না পাওয়া গেলে থানা হতে ফোন করবার জন্য বলব।
৪. দুই জনকে ধানক্ষেত হতে পাম্প নিয়ে এসে আগুন নেভাতে বলব এবং তাদেরকে ছনের ঘরের ছাদটি সর্বপ্রথম ভিজাতে বলব যাতে ঐখানে আগুন না লাগে।
৫. চাচাকে বলব অসুস্থ বাবাকে নিরাপদে সরিয়ে নিতে।
৬. গরুগুলো বাঁধা থাকলে চাকরকে ছেড়ে দেবার জন্য বলব।
৭. সবচেয়ে ছোট ভাই ও বড় বোনটিকে সিন্দুক হতে মূল্যবান দ্রব্যগুলো সরিয়ে নিতে বলব।
৮. ফায়ার ব্রিগেড এবং পুলিশ না আসা পর্যন্ত ঘরের চতুর্দিকে আমি নিজে লক্ষ রাখব যাতে ঘরের মধ্যে কোনো অপরিচিত লোক প্রবেশ করতে না পারে।
৯. বাকিদের আগুন আয়ত্তে আনতে বলব।
তোমরা খুলনা কলেজের ছাত্র। এখন কলেজ ছুটি। তোমরা সবাই ঢাকার বাসিন্দা। তোমরা "জলকন্যা" নামে একটি মাঝারি লঞ্চে চড়ে ঢাকায় রওয়ানা হলে। তখন রাত ১১টা। আকাশ কিছুটা মেঘাচ্ছন্ন হলেও বিপদের কোনো আশঙ্কা ছিল না। লঞ্চের তিনটি কেবিনের মধ্যে তোমার এক বন্ধুর বৃদ্ধ মাতাকে চিকিৎসার জন্য ঢাকা নেওয়া হচ্ছে। তিনি কারো সাহায্য ব্যতীত চলাচল করতে পারেন না। লঞ্চে দু'জন আনসার রয়েছ। তোমরা সবাই লঞ্চের ডেকে রয়েছে। লঞ্চে প্রায় ১০০ জন নারী, পুরুষ ও শিশু রয়েছে। যার মধ্যে ৭০ জন নিচে ও ৩০ জন লঞ্চের উপরে রয়েছে। ১২টার সময় হঠাৎ ঝড় আরম্ভ হলো। প্রচণ্ড ঝড়ে লঞ্চটি সদরঘাট থেকে ৫ মাইল উত্তর-পশ্চিমে সদ্য জেগে উঠা চরে এসে আটকে গেল। চরে তেমন কোনো লোকবসতি নেই, তবে সদ্য প্রস্তুত একখানা তহসিলদারের অফিস আছে। হঠাৎ তুমি দেখলে নিচ থেকে একজন খালাসি "আগুন আগুন" বলে চিৎকার করছে। কাছে এসে দেখলে ইঞ্জিন রুমে ২ ব্যারেল তৈল আছে। অগ্নি নির্বাপণ যন্ত্রগুলো ৭ দিন ধরে অকেজো হয়ে আছে। কয়েকটি বালু ভর্তি বালতি রয়েছে। আরও আছে ১০টি লাইফ জ্যাকেট ও ৫ জন বহনকারী একটি নৌকা। এ সময় তোমরা দেখতে পেলে ২টি নৌকা ভরে কয়েকজন সন্দেহভাজন লোক তোমাদের দিকে আসছে। জানা গেছে রহিমপুরে কয়েকজন কুখ্যাত ডাকাতের বাড়ি আছে। এ এলাকায় কয়েকবার ডাকাতি হয়েছে। উদ্ধারকারী জাহাজটি বরিশাল সদরঘাটের ১ মাইল পূর্বে অবস্থিত এবং তাতে সংবাদ পাঠানোর কোনো ব্যবস্থা নেই। চরটির সোজা দক্ষিণে তীরের দূরত্ব ১ মাইল। তীরেই তালতলা থানা অবস্থিত। সেখানে একজন বন্দুকধারী গার্ড এবং একখানা টেলিফোন আছে। ঢাকা হতে বরিশালগামী এই লঞ্চটি রাত ১১টার সময় ঐ স্থান অতিক্রম করার কথা। তালতলা থানা পরিষদের দক্ষিণে তালতলা পুলিশ স্টেশন অবস্থিত। লঞ্চ চালকের রুমে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে। তোমাদের সাথে বরিশাল মেডিকেল কলেজের একজন ডাক্তার ছিলেন। লঞ্চটিতে চলার মতো খাদ্য ছিল।
সমস্যাবলি:
১. খালাসির গায়ের আগুন নিভানো এবং দাহ্য পদার্থ অপসারণ।
২. ইঞ্জিন রুমের আগুন নিভানো এবং দাহ্য পদার্থ অপসারণ।
৩. বন্ধুর বৃদ্ধ মাতাকে নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নেয়া এবং আহত মহিলা ও শিশুদের প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করা।
৪. সন্দেহভাজন লোকদের দিকে দৃষ্টি রাখা এবং দুষ্কৃতিকারী হলে তাদের প্রতিহত করা।
৫. লঞ্চটিকে উদ্ধার করা এবং নিরাপদ গন্তব্যে পৌছানো নিশ্চিত করা।
সমাধান:
১. প্রথমেই আমাদের যে কয়েকজন বন্ধু আছে তাদের কয়েকজন বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে যাব। দুজন কম্বল বা মোটা কাথা দিয়ে খালাসিকে জড়িয়ে ধরব। ফলে আগুন নিভে যাবে। এরপর তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করব। প্রয়োজনে ডাক্তারের সাহায্য নেব।
২. আমাদের কয়েকজন বন্ধু বালতির বালু ইঞ্জিন রুমে ছিটিয়ে দেব ফলে ইঞ্জিন-এর আগুন নিভে যাবে। একই সাথে আমরা ইঞ্জিন রুমের দাহ্য পদার্থগুলো সরিয়ে নেব।
৩. বন্ধুর বৃদ্ধ মাতাকেও আমরা নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নেব। মহিলা ও শিশুদের আমরা তহশিলদারের অফিসে নিয়ে যাব এবং যারা আহত হয়েছে তাদের আমরা প্রাথমিক চিকিৎসা দেব।
৪. চারজন বন্ধুকে নৌকায় করে তালতলা থানা পরিষদে পাঠাব। তারা সেখান থেকে টেলিফোনে তালতলা পুলিশ স্টেশনে এবং সদরঘাটে ঘটনা অবহিত করবে এবং সাহায্যের অবেদন জানাবে।
৫. অন্য দুজন বন্ধু বন্ধুকধারী দুজন আনসারসহ লঞ্চের ছাদে উঠে লঞ্চের সার্চ লাইট দিয়ে রহিমপুর হতে আসা দুষ্কৃতিকারীর নৌকা দুটির দিকে নজর রাখবে। যদি তারা দুষ্কৃতিকারী হয় তবে রাইফেল দিয়ে ফাঁকা আওয়াজ করবে। ফলে ওরা ভয়ে সহজে কাছে আসবে না। কিন্তু তারা জেলে হলে আমরা তাদের সাহায্য চাইব।
৬. ইতোমধ্যে থানা হতে পুলিশ এসে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করবে এবং ততক্ষণে উদ্ধারকারী জাহাজ চলে আসবে এবং যাত্রীদের নিয়ে নিরাপদে ঢাকা পৌঁছাবে।
৭. ঢাকা-খুলনাগামী লঞ্চ যখন ক্রস করবে তখন তাদের সাহায্য চাইব।
তোমার পরীক্ষা শেষ হয়েছে। কিন্তু তোমার মনটা ভালো নেই। কারণ তোমার বড় ভাই মাসুদ আজ উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে চলে যাচ্ছে। এ উপলক্ষে তুমি এবং তোমার মা ছাড়া বাকি সবাই বিমানবন্দরে চলে গেছে, কিছুক্ষণ পর তোমার মা পাশের রুম হতে দৌড়ে এসে বলল, মাসুদ পাসপোর্ট ও ডলার ফেলে গেছে। ঠিক হলো তুমি এবং তোমার বন্ধু শুভপুর যাবে। তোমরা পান্থপাড়া রেলস্টেশন হতে ট্রেনে রওয়ানা দিলে। শুভপুর রেলস্টেশনে আসা মাত্র দেখতে পেলে তোমার কয়েকজন বন্ধু মিলে তোমার এক বন্ধুর ছোট ভাইকে মুমূর্ষু অবস্থায় ট্রেনে তুলছে। তখনি পাশের বস্তি হতে চিৎকার আসল একজন লোক এসে বলল, পাশের বস্তিতে ডাকাতি হচ্ছে। ডাকাতরা লুটপাট করছে এবং যুবতি মেয়েদের ধরে নিয়ে যাচ্ছে। এমন সময় তুমি বুঝতে পারলে তোমার পকেটে ডলারসহ মানিব্যাগ নেই। ফতেহপুর হতে শুভপুর ২৫ মাইল। পরবর্তী ট্রেন কখন আসবে তা অজ্ঞাত। এমতাবস্থায় তোমার করণীয় কী? দুজন বন্ধু এসে খবর দিল ডাকাতরা রেলের দুটি বগিতেও ডাকাতি করছে। চালকসহ যাত্রীদেরকে আহত করছে।
সমস্যাবলি :
১. প্রথমেই বন্ধুর ছোট ভাইকে নিকটস্থ হাসপাতালে প্রেরণ করা।
২. আহত ট্রেন চালক ও যাত্রীদের নিকটস্থ হাসপাতালে প্রেরণ করা।
৩. ডাকাতদের প্রতিহত করা ও যুবতি মেয়েদের উদ্ধার করা।
৪. হারানো ডলার উদ্ধার ও পাসপোর্টসহ ভাইয়ের কাছে পৌছা।
৫. রেলযাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং রেলযাত্রা নিশ্চিত করা।
সমাধান:
১. আমরা যে কয়েকজন বন্ধু আছি তারা কয়েক ভাগে ভাগ হব এবং একেক দল একেক কাজের ভার নেব।
২. প্রথমেই আমরা দু'বন্ধু একটি গাড়িতে করে বন্ধুর মুমূর্ষু ভাইকে নিকটস্থ ফতেহপুর হাসপাতালে প্রেরণ করব। সাথে পাসপোর্ট পাঠিয়ে দিতে পারব।
৩. অন্য একজন বন্ধু রেলস্টেশন হতে টেলিফোনে থানা ও হাসপাতালে জরুরি সংবাদ প্রেরণ করব এবং সতর্কতা হিসেবে ফায়ার স্টেশনে জানিয়ে রাখব।
৪. আমরা যে কামড়ায় রয়েছি সে কামড়ার দরজা বন্ধ করে সন্দেহভাজন লোকদের তল্লাসি করে হারানো ডলারসহ মানিব্যাগ উদ্ধার করব। ৫. একই সাথে রেলপুলিশের সহায়তায় বস্তিতে ডাকাতিরত ডাকাতদের প্রতিহত করব। এবার ট্রেনের যাত্রীদের সাহায্যে ট্রেনের
ডাকাতদের প্রতিহত করব।
৬. ইতোমধ্যে হাসপাতাল হতে এম্বুলেন্সসহ ডাক্তার চলে আসবে ও থানা হতে পুলিশ চলে আসবে। অল্প আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করব এবং গুরুতর আহতদের এম্বুলেন্সে প্রেরণ করব।
৭. বস্তির লোকজন ডাকাতদের ঘিরে রাখবে। পুলিশের সহায়তায় আমাদের কয়েক বন্ধু মিলে ডাকাতদের পাকড়াও করব এবং যুবতি মেয়েদের উদ্ধার করব।
৮. আমি একজন বন্ধুকে সাথে নিয়ে ফতেহপুর হতে বাসযোগে ডলার নিয়ে শুভপুর চলে যাব।
৯. রেলপুলিশের সহায়তায় যাত্রীদের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করব এবং যথাসময়ে ট্রেন শুভপুর যাত্রা করবে।
ছুটির দিন সকাল আটটার সময় তোমরা কলেজের হোস্টেলে ছিলে। টেলিফোনের মাধ্যমে সংবাদ পেলে যে, কলেজ হতে ১৫ মাইল দূরে রাজেন্দ্রপুর শালবনে আগুন লেগেছে। এখন তোমরা একজন শিক্ষকসহ ৩০ জন ছাত্র ও ৫টি বন্দুক নিয়ে তোমাদের কলেজের বাসে চরে আগুন নিভানোর জন্য রওয়ানা করলে। রোড দিয়ে যাওয়ার সময় একটি রেল ক্রসিং-এর নিকট গাড়িটি দুর্ঘটনায় পতিত হয়। গাড়িটি অকেজো হয়ে যায়। রেল ক্রসিং-এ গিয়ে দেখতে পেলে সেখানকার কর্তব্যরত সিগন্যাল ম্যান-এর হাত-পা বাঁধা এবং সে জানাল কিছুক্ষণ • পূর্বে অস্ত্রসহ কয়েকজন দুষ্কৃতিকারী সেখানে এসেছিল এবং তার কাছ থেকে জনতা এক্সপ্রেসের উক্ত স্থান অতিক্রমের সময় জেনে নিয়েছে। তারা তার হাত-পা বেঁধে তার ব্যবহার্য লাল, নীল পতাকা দুইটি নিয়ে গিয়েছে। সে আরও জানায় সম্ভবত তারা জনতা এক্সপ্রেসকে দুর্ঘটনায় ফেলার জন্য স্টেশন থেকে ১ মাইল দূরে রেল ব্রিজটি ধ্বংস করেছে। ঘটনাস্থল হতে আধা মাইল দূরে একটি কনস্ট্রাকশন কোম্পানি আছে। জানা গেল সেখানকার টেলিফোন মাঝে মাঝে বিকল থাকে, ঘটনাস্থল হতে ৩ মাইল দূরে স্টিমার ঘাট। বেলা ১টার সময় স্টিমার আসে। এখন সময় বেলা নয়টা। ১০টার সময় জনতা এক্সপ্রেস ঘটনাস্থল অতিক্রমের জন্য পূর্বের স্টেশন হতে ছাড়বে।
সমস্যাবলি:
১. আহতদের উদ্ধার।
২. রেলকে ধ্বংস ও ডাকাতের হাত থেকে রক্ষা করা।
৩. আগুন নিভানো।
সমাধান:
১. প্রথমেই কাজ হবে টেলিফোনে পূর্বের রেলস্টেশনে ডায়াল করা, ফায়ার ব্রিগেডকে খবর দেওয়া। ঘটনাটি রোডে সুতরাং যেকোনো 'সময়ই সেখানে গাড়ি পাওয়া যাবে। প্রথমেই যেকোনো গাড়ির সহায়তায় আহতদের নিকটতম চিকিৎসা কেন্দ্রে প্রেরণ করব। একজন ছাত্রকে পাঠাব যেন নিকটতম টেলিফোনের কাছে পৌঁছে ঘটনাস্থলের পূর্বতন স্টেশন মাস্টারকে ঘটনা জ্ঞাত করে। যাতে ট্রেনটি না ছাড়ে। সে থানা ও ফায়ার ব্রিগেডকে টেলিফোনে আমাদের সাহায্যের জন্য পাঠাবে।
২. টেলিফোনের পূর্বে গাড়ি স্টেশন ছেড়ে দিতে পারে। সেই জন্য সিগন্যালম্যানকে মুক্ত করব এবং লাল পতাকা/কাপড় সংগ্রহ করে বন্দুকসহ ৫/৬ জন ছাত্র উক্ত ব্রিজের দিকে পাঠিয়ে দেব। লাল কাপড়বাহী ছাত্রের কাজ হবে উল্লিখিত ব্রিজের পূর্বেই গাড়িটিকে * থামানো যাতে গাড়িটি দুর্ঘটনা হতে রক্ষা পায়। বন্দুকধারীদের কাজ হবে আড়ালে থেকে পতাকাবাহীকে রক্ষা করা। এর মধ্যে পুলিশ ঘটনাস্থলে চলে আসবে। আমরা তাদের সহায়তায় ডাকাতদের ধরে পুলিশের হাতে সোপর্দ করব।
৩. একটি বন্দুকসহ দু'জন ছাত্রকে দুর্ঘটনা কবলিত গাড়ির কাছে পাহাড়ায় রেখে বাকি ছাত্র নিয়ে রোড হতে যেকোনো গাড়ির সহায়তায় অগ্নিকাণ্ডের স্থলে পৌঁছে স্থানীয় লোকদের সহায়তায় আগুন নিভানোর কাজে লিপ্ত হব। এতক্ষণে টেলিফোনে সংবাদ পেয়ে ফায়ার ব্রিগেডের লোক ঘটনাস্থলে পৌঁছে যাবে।
পরদিন পরিবহন ধর্মঘট হওয়ার কারণে রাতের বেলায়ই বাসে তোমরা কয়েক বন্ধু বিএমএ-তে যোগ দেবার জন্য রওয়ানা হলে। রাতে সবাই ঘুমিয়ে পড়লে হঠাৎ চিৎকারে ঘুম ভেঙে তুমি দেখলে কয়েক জন অস্ত্রধারী ডাকাত বাসে ডাকাতি করে পাশের জঙ্গলে লুকিয়ে পড়েছে। তোমাদের পাশেই দেখতে পেলে একজন আনসার মারা গেছে এবং অন্যজন মারাত্মকভাবে আহত। তোমাদের বাসে একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আছে সে বিএনসিসি-র সদস্য এবং বাসের ছাদে তার একটি সাইকেল রয়েছে। ড্রাইভারকে বাস চালাতে বললে সে জানাল যে, বাসে তেল নেই। তোমরা দুষ্কৃতিকারীদের সাথে ড্রাইভার ও হেলপারের ষড়যন্ত্রের কথা বুঝতে পারলে। ঘটনাটি ঘটে হেমায়েতপুর এবং শিকারপুর থানার নিকটবর্তী মণ্ডল বাড়ির কাছে। মণ্ডল বাড়িতে একটি ইঞ্জিন চালিত নৌকা রয়েছে, তখন রাত ২টা। আজ রাতে হেমায়েতপুরে এক মন্ত্রী এসেছেন এবং তোমরা জানতে পারলে যে একদল সন্ত্রাসী মন্ত্রীকে মেরে ফেলার জন্য হামলা করবে এবং ডাকাতি করবে। ঘটনাস্থলের ৪ মাইল দক্ষিণে একটি টেলিফোন এক্সচেঞ্জ আছে, যেখানে রাত ১২টার পর সাধারণত অপারেটর থাকে না। ১২ মাইল পশ্চিমে হেমায়েতপুর থানা, ৭ মাইল পূর্বদিকে শিকারপুর থানা। এখন তোমরা কী করতে পার?
সমস্যাবলি :
১. মারাত্মক আহত আনসারকে হাসপাতালে প্রেরণ।
২. মন্ত্রীর জীবন রক্ষা।
৩. ডাকাতদের ধরে পুলিশে সোর্পদ করা এবং একই সাথে বাসের ড্রাইভার ও হেলপারকে পুলিশে দেওয়া।
৪. ডাকাতদের ধরে লুট করা জিনিসপত্র উদ্ধার।
৫. নিহত আনসারকে থানায় সোপর্দ এবং গন্তব্যে পৌছার ব্যবস্থা।
সমাধান:
১. প্রসিদ্ধ মণ্ডল বাড়িতে ফোন থাকা স্বাভাবিক। সেখান থেকে থানা, হেমায়েতপুর থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ফোন করে ঘটনাবলি অবহিত করব এবং একই সাথে মন্ত্রীর বাড়িতে ফোন করে মন্ত্রীর জীবননাশের পরিকল্পনার কথা জানাব।
২. বন্ধুদের একটি গ্রুপ হাইওয়ের কোনো গাড়িতে করে মারাত্মক আহত আনসারকে হাসপাতালে পাঠাবে।
৩. হেমায়েতপুর থানার পুলিশের সহায়তায় আমরা ডাকাতদের ধরে ফেলব এবং লুট হয়ে যাওয়া মালামাল উদ্ধার করব।
৪. নিরাপত্তা রক্ষীরা মন্ত্রীর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করবে এবং আমরা গন্তব্যে রওয়ানা হব এবং মৃত আনসারকে পার্শ্ববর্তী থানায় সোপর্দ করব।
কালীগঞ্জ হতে ৬০ মাইল দূরে নীলগঞ্জ ও টালিগঞ্জ পাশাপাশি দুটি গ্রাম। নীলগঞ্জের পাশেই একটি কলাবাগান। তাতে সাপের ভয়। কালীগঞ্জের সাথে নীলগঞ্জ ও টালিগঞ্জ একটি হাইওয়ে দ্বারা সংযুক্ত। তোমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে অর্ণবের গ্রামের বাড়ি নীলগঞ্জে বেড়াতে গেলে। তোমরা মাইক্রোবাসে সেখানে পৌঁছে রাত ৮টায় গিয়ে শুনলে অর্ণবের বিশ্ববিদ্যালয়গামী বড় বোন সকালে বান্ধবীর বাসায় যাবে বলে বেরিয়েছে, কিন্তু এখনও ফেরেনি। অর্ণবের মা টেলিফোনে ঐ বান্ধবীর বাসায় খবর নিয়ে জেনেছে যে, সে বান্ধবীর বাসায় যায়নি। এদিকে অর্ণবের বাবা-মা পারিবারিক মর্যাদার কথা ভেবে পুলিশের শরণাপন্ন হতে রাজি নন। অর্ণবের চাচাত ভাইয়ের বন্ধুর পরিচয়ে আসিফ নামে একজন সকালে টেলিফোন করে জানিয়েছে যে অর্ণবের চাচা খুব অসুস্থ। দুজন ডাক্তার তাঁর চিকিৎসা করছেন। এমন সময় আসিফ এসে জানাল অর্ণবের চাচা মারা গেছেন এবং ঐ এলাকার সব টেলিফোন সকাল থেকে নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন থাকায় সে নিজেই খবর দিতে চলে এসেছে। রাত দশটার দিকে সব সমস্যা সমাধানের জন্য তোমরা টালিগঞ্জের উদ্দেশে রওয়ানা হলে। পথিমধ্যেই দেখলে একটি কালভার্ট ভেঙে গবাদিপশু বোঝাই একটি ট্রাক খালের পানিতে ডুবে যাচ্ছে।
সমস্যাবলি:
১. অর্ণবের বোনকে খুঁজে বের করা।
২. ট্রাকের ড্রাইভারকে বাঁচানো ও গবাদিপশু রক্ষা।
৩. কালভার্ট নির্মাণ।
৪. ট্রাক উদ্ধার।
৫. অর্ণবের চাচার সৎকারের ব্যবস্থা করা।
সমাধান:
১. পুলিশ গোপনীয়তা রক্ষা করবে এ শর্তে তোমরা পুলিশকে ঘটনাটা অবহিত করবে এবং একই সাথে হাসপাতালে ফোন করে জানবে সেখানে সিট খালি আছে কি না?
২. যে বন্ধুরা ভালো সাঁতার জানে তাদের মধ্যে ২/৩ জন খালে নেমে ট্রাকের জানালা খোলার ব্যবস্থা করবে এবং ড্রাইভারকে উদ্ধার করবে। সেই সাথে গবাদি পশুগুলোর বাঁধন কেটে দিলে সেগুলো সাঁতরিয়ে তীরে চলে আসবে।
৩. আপাতত স'মিল থেকে কাঠ এবং ড্রাম নিয়ে কালভার্ট ঠিক করে তখনকার মতো কার্য সমাধা করবে।
৪. ফায়ার ব্রিগেড থাকলে ফায়ার ব্রিগেডকে খবর দিবে নতুবা অন্য একটি চলন্ত ট্রাকের সাথে রশি দিয়ে বেঁধে ডুবন্ত ট্রাকটাকে টেনে তুলবে।
৫. সব কাজ সমাধানের পর সবাই টালিগঞ্জে নিয়ে অর্ণবের চাচার সৎকার করে আসবে।
রসুলপুর থেকে এক বন্ধুর বিয়ে খেয়ে ফিরছিলে। দুর্যোগপূর্ণ রাত হওয়া সত্ত্বেও ১১টার সময় তোমরা চলে আসছিলে কারণ পরেরদিন তোমাদের কিছু জরুরি কাজ আছে। কিছুদূর আসার পর দেখলে রাস্তায় একটি প্রকাণ্ড গাছ পড়ে আছে যা অনেক চেষ্টা করেও সরাতেপারলে না। তোমাদের থেকে কিছু দূরে ভৈরব নদীতে নৌকার আলো দেখতে পেয়ে সাহায্যের জন্য যাবে চিন্তা করলে। কিন্তু পর মুহূর্তেই নৌকাটি ডুবে গেল এবং হাউমাউ করে চিৎকার শুনতে পেলে। নদীর ওপার থেকে একটি লোক হন্তদন্ত হয়ে ছুটে এসে বলল যে ভূয়াপুর গ্রামের কিছু ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে এবং সেখানে দুষ্কৃতিকারীদের ভয়ও রয়েছে। তোমরা যখন ভাবতে থাকলে যে কিছু একটা করা প্রয়োজন তখনই একজন মধ্যবয়স্ক লোক এসে কোনো রকমে বলল যে, স' মিলের ছাদ ভেঙে একটি শিশু মারাত্মক আহত হয়েছে। তোমাদের সাথে একটি লম্বা রশি, টুলবক্স ও জ্যাক রয়েছে। গাড়িতে তেল যে পরিমাণ আছে তা দিয়ে বড়জোর ৪০ মাইল যাওয়া যায়।
সমস্যাবলি:
১. ডুবন্ত যাত্রীদের উদ্ধার।
২. স' মিলের ছাদ ভেঙে আহত শিশুকে উদ্ধার।
৩. ভূয়াপুর গ্রামে উদ্ধারকার্য চালানো এবং দুষ্কৃতিকারীদের প্রতিরোধ।
৪. গাছ অপসারণ করে গন্তব্যে পৌছানো।
সমাধান:
১. প্রথমে নিকটবর্তী থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ফোন করে সংশ্লিষ্ট থানায় ঘটনাগুলো জানাব।
২. আমাদের একটি গ্রুপ ভৈরব নদীতে চলে যাবে এবং যারা ভালো সাঁতার জানে তারা কোমরে রশি বেঁধে নদীতে নেমে যাবে এবং কেউ কেউ রশি ধরে রাখবে যাতে করে ডুবন্তদেরকে ঠিকমতো উদ্ধার করা যায় এবং অন্য কেউ ডুবে না যায়।
ও. অন্য এক গ্রুপ হাইওয়ের কোনো গাড়িতে করে সমিলে চলে যাবে এবং শিশুকে উদ্ধার করে হাসপাতালে স্থানান্তরের ব্যবস্থা করবে এবং করাত এনে গাছটিকে কেটে ফেলে রাস্তা পরিষ্কার করবে।
৪. আর এক গ্রুপ ভূয়াপুর গ্রামে গিয়ে স্থানীয় লোকদের সহায়তায় উদ্ধারকার্য চালাবে এবং নিরাপত্তার ব্যবস্থা করবে। অতঃপর আমরা গন্তব্যের উদ্দেশে রওয়ানা দেব।
তোমরা কয়েকজন বন্ধু দিনাজপুর হতে নাইট কোচে ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা হয়েছ। কাল সকালে তোমাদের আইএসএসবি পরীক্ষা, তোমরা ফেরি ঘাট হতে ঢাকার দিকে ৫/৭ কিলোমিটার যানজট দেখতে পেয়ে নেমে এলে এবং প্রচণ্ড দাঙ্গা-হাঙ্গামার শব্দ শুনলে। এসেই বুঝতে পারলে ডাকাতরা সামনেই রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে ডাকাতি করছে। দু'জন বাস যাত্রী আহত অবস্থায় ব্যারিকেডের ওপাশ থেকে দৌড়ে এল এবং বলল যে, ডাকাতরা একজন বাস চালককে অপহরণ করে রহিমগঞ্জ গ্রামের দিকে নিয়ে গিয়েছে। পাশের গ্রামের এক লোক এসে বলল যে, গ্রামের বাড়িতে আগুন লেগেছে। তোমাদের এক বন্ধু বাসে করে মাকে নিয়ে চিকিৎসার জন্য ঢাকা যাচ্ছে। হঠাৎ বন্ধুর অ্যাপেনডিসাইটিসের ব্যথা উঠেছে এবং তোমাদের সাথের ডাক্তার পরীক্ষা করে বলেন যে, অপারেশন জরুরি। ফেরিঘাটের পুলিশ বাহিনী বিশেষ অপারেশনে অন্যত্র চলে গিয়েছে, রাত এখন এগারটা। এখন তোমাদের করণীয় কী?
সমস্যাবলি:
১. বন্ধুর অসুস্থ মাতাকে হাসপাতালে পাঠানো।
২. বন্ধুর অপারেশনের ব্যবস্থা করা।
৩. পার্শ্ববর্তী গ্রামের আগুন নেভানো।
৪. আহত যাত্রীদের প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান।
৫. ডাকাতদের প্রতিহত করা এবং অপহৃত বাসচালককে উদ্ধার।
৬. ব্যারিকেড অপসারণ ও গন্তব্যে পৌছানো।
সমাধান:
১. প্রথমেই সবাইকে বাস থেকে নামাবে এবং তোমাদের ২ বন্ধু বন্ধুর মাতা এবং বন্ধুকে ডাক্তারসহ বাসযোগেসদর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাওয়ার ব্যবস্থা করব।
২. অন্য ২ বন্ধু ফেরিঘাটে যাবে এবং সেখান থেকে নিকটস্থ থানা পুলিশ ফাঁড়িতে ফোন করে ঘটনা অবহিত করব।
৩. কিছু বন্ধুর একটি গ্রুপ পার্শ্ববর্তী গ্রামে গিয়ে স্থানীয় লোকের সহায়তায় আগুন নেভাবে।
৪. ব্যারিকেডের কারণে যেসব বাস বা যান আটকে গেছে সেসব বাসের আনসারগণকে সংঘটিত করে ফাঁকা গুলির আওয়াজ করে ডাকাতদেরকে ভড়কে দেব এবং ব্যারিকেড অপসারণ করব।
৫. ইতোমধ্যে পুলিশ চলে আসবে এবং অপহৃত চালককে উদ্ধারের ব্যবস্থা করবে এবং আমরা গন্তব্যের উদ্দেশে রওয়ানা দেব।
শীতকালে তোমাদের গ্রামে নামকরা এক সার্কাস পার্টি এসেছে। তোমার আবার জীব-জন্তুর খেলা দেখার খুব শখ। তুমি তাই এই শীতের রাতে সার্কাস দেখার জন্য মেলায় গেলে।
রাত ১০টায় সার্কাসের প্রদর্শনী শুরু হলো। তুমি তন্ময় হয়ে মজার মজার খেলা উপভোগ করছিলে। এমন সময় আগুনের রিং দিয়ে খেলা দেখানো শুরু হলো। তুমি এ খেলা দেখে বিস্ময়ে উত্তেজিত হয়ে উঠেছিলে।
হঠাৎ তুমি শোরগোল শুনতে পেলে- 'বাঘ আসছে।' সার্কাসের খাঁচা ভেঙে বাঘ বেরিয়ে গেছে। বাঘটি হিংস্রভাবে ঘুরছে। লোকজন ভয়ে এদিক-ওদিক ছুটাছুটি করছে। গোলমালের ফলে যে লোকটি আগুনের রিং দিয়ে খেলা দেখাচ্ছিল তার গায়ে আগুন লেগে গেছে। শেষে চারদিকে আগুন ছড়িয়ে পড়ল। কিন্তু পাশেই কিছু অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র ছিল। এমতাবস্থায় তোমার করণীয় কী?
সমস্যাবলি:
১. বাঘকে খাঁচায় বন্দি করতে হবে।
২. আগুন নিভাতে হবে।
৩. আগুনের রিং দিয়ে যে খেলা দেখাচ্ছিল, সে আহত হয়েছে। তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।
সমাধান:
১. যে লোকটি বাঘের খেলা দেখায় তাকে খুঁজে বের করতে হবে। কেননা সেই কেবল পারবে বাঘটিকে পোষ মানাতে। তাকে খুঁজে পেলে বাঘটিকে খাঁচায় বন্দি করতে বলব।
২. অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র দিয়ে আগুন নিভানোর ব্যবস্থা করতে হবে।
৩. সার্কাস পার্টির লোকজনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে আহত খেলোয়াড়কে আগুন থেকে মুক্ত করতে হবে। তাকে মোটা কাপড় দিয়ে জড়িয়ে ধরার পরামর্শ দিতে হবে। এতে করে আগুন জ্বলতে পারবে না এবং তার প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।
৪. সার্কাসের মাইকে ঘোষণা দিয়ে ছুটাছুটিরত লোকজনকে শান্ত হওয়ার জন্য অনুরোধ করতে হবে।
সকাল ১০টা। তোমরা তিন বন্ধু মিলে দোতলার ঘরে জানালার কাছে বসে গল্প করছ। তোমার বাড়ির পাশ দিয়ে বিশ্বরোড চলে গিয়েছে। হঠাৎ করে তুমি দেখতে পেলে একটা বারো চাকার ট্রাক একটা ছাগলকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু ট্রাকে অতিরিক্ত মাল থাকায় চালক তার ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে এবং সঙ্গে সঙ্গে সেই ট্রাক রাস্তার পাশে খাদে পড়ে উল্টে যায়। ট্রাকের উপর দুই ব্যক্তি বাঁচার জন্য লাফ দিল কিন্তু তারা মারাত্মকভাবে আহত হয়। অপরদিকে ট্রাক উল্টে যাওয়ায় মালামালের চাপে ট্রাকের স্টিয়ারিং চালকের দুই পায়ের উপর বেঁকে পড়ে। চালক জ্ঞান হারায়নি। সে 'বাঁচাও বাঁচাও' বলে চিৎকার করছে। চালক এমন বেকায়দায় পড়েছে যে, ট্রাক পুনরায় উল্টানো ব্যতীত তাকে উদ্ধার করা মুশকিল। অপরদিকে আহত দুই ব্যক্তির অবস্থা আশঙ্কাজনক। জরুরি চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে না পারলে মারা যেতে পারে। ঘটনাস্থল থেকে শহর তিন মাইল দূরে। রাস্তা দিয়ে সবসময় গাড়ি চলাচল করছে। ক্রেন ছাড়া ট্রাক উত্তোলন সম্ভব নয়। আর এ যন্ত্র ক্যান্টনমেন্ট ছাড়া শহরের আর কোথাও নেই। ট্রাকে অনেক মূল্যবান মালামাল আছে তা রক্ষণাবেক্ষণ না করলে লুটপাট হওয়ার সম্ভাবনা' আছে। এমতাবস্থায় তুমি কী করবে?
সমস্যাবলি:
১. আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা।
২. ট্রাক উল্টানোর ব্যবস্থা করা এবং চালককে উদ্ধার করা।
৩. ট্রাকের মূল্যবান মালামালের রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা নেয়া।
সমাধান:
১. যেহেতু হাইওয়েতে সবসময় গাড়ি চলাচল করে, সেহেতু একটি যাত্রীবাহী গাড়ি থামিয়ে আহত দুই ব্যক্তিকে শহরের একটা ভালো হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমার এক বন্ধুকে সাথে দেব। প্রথমেই সে আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাবে এবং জরুরি বিভাগে ভর্তি করিয়ে তাদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা নেবে।
২. আমার অপর এক বন্ধুকে দুর্ঘটনা কবলিত ট্রাকের কাছে রেখে একটি যাত্রীবাহী বাসে উঠে রওয়ানা দিব। থানা নিকটে জেনেও চালককে উদ্ধারের জন্য বাস থেকে নেমে আগে ক্যান্টনমেন্টে চলে যাব। এমপি চেকপোস্টে ঘটনার আংশিক বিবরণ দিয়ে ক্যান্টনমেন্টে ঢুকে পড়ব এবং ক্রেনের দায়িত্বে নিয়োজিত ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নিকটে বিস্তারিত খুলে বলার পর যন্ত্র দ্বারা দুর্ঘটনা কবলিত ট্রাক উল্টিয়ে চালককে উদ্ধার করব এবং চিকিৎসার জন্য দ্রুত হাসপাতালে নেয়ার ব্যবস্থা করব। ক্যান্টনমেন্ট থেকে থানাতে টেলিফোন করে পুলিশকে ঘটনাস্থলে যাওয়ার কথা বলব।
৩. ঘটনাস্থলে রেখে যাওয়া আমার বন্ধু সেখানে উপস্থিত কিছু পরিচিত লোকজনের সাহায্য নিয়ে ট্রাকের মালপত্রের দিকে তীক্ষ্ণভাবে নজর রাখবে যাতে কোনো মালপত্র লুটপাট না হতে পারে। যেহেতু থানায় টেলিফোন করা আছে, সেহেতু পুলিশ অল্পক্ষণেই ঘটনাস্থলে পৌছে গেলে ট্রাকের মালামালের দায়িত্ব তাদের বুঝিয়ে দিয়ে আমরা নিশ্চিন্ত হব।
তোমরা কয়েক বন্ধু মিলে একটি নতুন তৈরি পোশাকের দোকানে গেলে। দোকানে অনেক নতুন পোশাক এসেছে। তোমরা সবাই মিলে যার পছন্দমতো কেনাকাটা করে বাড়ির উদ্দেশে রওয়ানা দিলে।
যার আসতে আসতে দেখতে পেলে যাত্রীবাহী একটি বাস দুর্বল একটা ব্রিজের উপর দিয়ে পার হওয়ার সময় হঠাৎ ব্রিজ ভেঙে খাদে পড়ে গেল। খাদ খুব গভীর নয়। বাস খাদে পড়ে যাওয়ায় অনেক লোক আহত হয়েছে। অনেক ছোট ছোট ছেলেমেয়ে বাসের মধ্যে আটকে পড়েছে। তোমরা তাদেরকে উদ্ধার করার জন্য সবাই দৌড় শুরু করলে পিছে পড়া এক বন্ধু হঠাৎ চিৎকার করে বলল, "আমাকে সাপে কেটেছে।" ঘটনাস্থল থেকে থানা ৫ মাইল দূরে অবস্থিত। ব্রিজ ভেঙে পড়ার খবর ছড়িয়ে পড়ায় বাস চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছে। সাপেকাটা বন্ধু, আহত লোকদের চিকিৎসা এবং বাসে আটকে পড়া যাত্রীদের উদ্ধার বিশেষ প্রয়োজন।
সমস্যাবলি:
১. সাপেকাটা বন্ধুর চিকিৎসার ব্যবস্থা করা।
২. থানার সাথে যোগাযোগের ব্যবস্থা করা।
৩. আটকে পড়া যাত্রীদের উদ্ধার।
৪. আহতদের চিকিৎসা করা।
সমাধান:
১. আমাদের যে বন্ধুটিকে সাপে কেটেছে তাকে সাপের বিষক্রিয়ার হাত থেকে বাঁচানোর জন্য প্রথমেই তার পায়ে হাঁটুর উপর রশি বা রশি জাতীয় কিছু দিয়ে খুব জোড়ে বেঁধে দিব যাতে করে সাপের বিষ রক্তের মাধ্যমে শরীরের উপর দিকে উঠতে না পারে।
২. ব্রিজ ভেঙে পড়ার দরুন কোনো যানবাহন পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। তাই থানার সাথে যোগাযোগ করতে হলে একজন সাইকেল আরোহীকে অনুরোধ করে তার কাছ থেকে সাইকেল নিয়ে অপর এক বন্ধুকে থানায় খবর দেওয়ার জন্য পাঠাব এবং হাসপাতাল থেকে তাকে অ্যাম্বুলেন্স আনার কথা বলে দিব।
৩. খাদের গভীরতা কম থাকায় সাথের কয়েকজন বন্ধু ইতোমধ্যেই কাজ শুরু করে দেবে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত লোকজনের সহায়তায় আমরা বাসে আটকে পড়া যাত্রীদেরকে উদ্ধার করতে সক্ষম হব এবং আহতদের সেবা করতে থাকব।
৪. সাইকেল আরোহী থানায় ও থানা হাসপাতালে দুর্ঘটনার খবর জানালে হাসপাতাল থেকে অ্যাম্বুলেন্স খুব দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে যাবে। আমরা তখন সবাই মিলে আহতদের অ্যাম্বুলেন্সে উঠাব। এরপর আমি আহতদের সঙ্গে থানা হাসপাতালে যাব এবং তাদের হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করাব। প্রথমেই সাপেকাটা বন্ধুকে জরুরি চিকিৎসার ব্যবস্থা করব।
তোমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে একটি গাড়ি নিয়ে বেড়ানোর উদ্দেশ্যে বেরিয়েছ। কিছুক্ষণ বেড়ানোর পর তোমরা চা-নাস্তা করার জন্য একটি রেস্টুরেন্টে গিয়ে বসলে।
তোমাদের পাশের টেবিলে বসা কয়েকজন কী যেন বলাবলি করছে। তোমরা মন দিয়ে তাদের কথাগুলো শোনার চেষ্টা করলে এবং
তাদের মূল কথাগুলো শুনে ফেললে। তারা বলাবলি করছিল যে, আজ বিকাল তিনটার সময় নীলগঞ্জ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় খেলার
মাঠে একজন মন্ত্রী জনসভায় ভাষণ দেবেন। তারা মন্ত্রীর সভায় বোমা বিস্ফোরণের জন্য লোক পাঠিয়েছে। তিনটার সময় মন্ত্রী সেখানে উপস্থিত হওয়ার সাথে সাথে সেখানে তারা বোমা বিস্ফোরণ ঘটাবে।
রেস্টুরেন্টে যখন এ আলোচনা চলছিল তখন সময় ২টা ৩০ মিনিট। বোমা বিস্ফোরণের হাত থেকে মন্ত্রীকে বা জনসাধারণকে কিভাবে বাঁচানো যায় তোমরা তার সিদ্ধান্ত নিলে।
কিন্তু তোমাদের গাড়ি নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌছতে সময় লাগবে ২৫ মিনিট। সেখানে কোনো টেলিযোগাযোগের ব্যবস্থা নেই। অবশেষে তোমরা গাড়ি নিয়ে রওয়ানা দিলে, যেতে যেতে তোমরা দেখতে পেলে রাস্তার পাশে একটা বড় জলাশয়ে ১২-১৩ বছরের একটি ছেলে পানিতে পড়ে হাবুডুবু খাচ্ছে। ছেলেটিকে বাঁচানো দরকার। ছেলেটিকে বাঁচাতে হবে এবং মন্ত্রীর জনসভাকে মারাত্মক বিপদ থেকে রক্ষা করতে হবে। এমতাবস্থায় তোমাদের করণীয় কী?
সমস্যাবলি:
১. ছেলেটিকে উদ্ধার করা।
২. পুলিশকে খবর দেয়া এবং দুষ্কৃতিকারীদের ধরার ব্যবস্থা করা।
৩. মন্ত্রী এবং জনসভাকে বিপদমুক্ত করা।
সমাধান:
১. পানিতে পড়ে যাওয়া ছেলেটিকে উদ্ধার করার জন্য আমার এক বন্ধুকে গাড়িতে থাকা অতিরিক্ত টায়ারসহ নামিয়ে দিয়ে তাকে বলে যাব যে ছেলেটিকে বাঁচাতে হলে এই টায়ার তাড়াতাড়ি ঐ ছেলের নিকটে ফেলতে হবে। তখন ছেলেটি টায়ার ধরে আস্তে আস্তে কিনারে পৌছালে তাকে ধরে উপরে উঠিয়ে পেটে চাপ দিয়ে পানি বের করে দিবে এবং আস্তে আস্তে সুস্থ করার ব্যবস্থা নিবে।
২. আমরা যে রাস্তা দিয়ে মন্ত্রীর জনসভায় যাচ্ছি সেই রাস্তা থেকে অল্প একটু দূরে রাস্তার পাশেই থানা। একজনকে নামিয়ে দিয়ে বলব সে যেন থানায় গিয়ে পুলিশ নিয়ে এসে রেস্টুরেন্টে অবস্থানকারী দুষ্কৃতিকারীদেরকে গ্রেফতার করে। এভাবে পুলিশের সাহায্য নিয়ে দুষ্কৃতিকারীদের গ্রেফতার করে আসল তথ্য বের করব।
৩. আমরা ঘটনাস্থলে পৌছার পর এক মুহূর্ত বিলম্ব না করে মঞ্চে উঠে যাব এবং মাইকে মূল ঘটনার কথা ঘোষণা করে দেব। জনগণকে দ্রুত সভার স্থান ত্যাগ করার কথা বলব এবং সভায় আগত পুলিশ ও আনসারের সহায়তায় মন্ত্রীকে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাব।
নিচের গল্পটি মনোযোগ দিয়ে পড়। এরপর গল্পটির একটি নাম দিবে। গল্পটিতে কী কী সমস্যা আছে তা লিখবে এবং সেই সমস্যাগুলোর সমাধান দিবে। গল্পে নেই এমন কোনো কাল্পনিক বস্তুর সাহায্য গ্রহণ করা যাবে না।
গল্প: তুমি মঈনপুর বিদ্যালয়ের একজন ছাত্র এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে থাক। তোমার বাড়ি মল্লিকপুরে। হঠাৎ খবর পেলে বাড়িতে তোমার বাবা খুব অসুস্থ। তার চিকিৎসার জন্য যে ঔষধ প্রয়োজন তা মল্লিকপুরে নেই। কিন্তু মঈনপুরে পাওয়া যায়। তোমার বাবার রক্ত প্রয়োজন। তোমার ও তোমার বাবার রক্তের গ্রুপ একই। তুমি সিদ্ধান্ত নিলে তুমি মঈনপুর থেকে ঔষধ কিনে নিয়ে বাড়ি যাবে এবং বাবাকে রক্ত দিবে। এদিকে দুদিন পর তোমার ২য় সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা। বাড়ি যাওয়ার জন্য রাতের শেষ বাসে করে রওয়ানা হলে। পথিমধ্যে তোমার গন্তব্যের বাসস্ট্যান্ড হতে ১ কি.মি. দূরে শালবনের কাছে তোমার বাস নষ্ট হয়ে গেল। বাস থেকে নেমে তুমি অল্প কিছুদূর গিয়েছ এমন সময় একটি ছোট ছেলে দৌড় দিয়ে শালবনের ভিতর থেকে আসা রাস্তা দিয়ে এসে তোমাকে বলল, তার নাম শাহেদ। ২ জন সশস্ত্র অপহরণকারী তাকেসহ ৮ জন ছেলেকে মাইক্রোবাসে করে শালনা থেকে ধরে এনে শালবনে লুকিয়ে রেখেছে। এই বলে সে জ্ঞান হারাল। এমন সময় তুমি দেখলে শালবন থেকে হেডলাইট জ্বালিয়ে একটি গাড়ি বের হয়ে আসছে। তুমি শাহেদের জ্ঞান ফিরাবে বলে তোমার ব্যাগ থেকে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বের করবে বলে ব্যাগে হাত দিয়ে দেখলে যে ব্যাগটিতে তালা মারা তা তোমার নয়। রাস্তায় কোনো যানবাহন চলাচল করছে না। তবে বাসস্ট্যান্ডে রিকশা পাওয়া যায়। তুমি লক্ষ করে দেখলে যে, তোমার নষ্ট হওয়া বাসটি আর আগের জায়গায় নেই তা চলে গিয়েছে।
সমস্যাবলি:
১. ২ জন বন্দুকধারী শালনা থেকে ৮ জন ছেলেকে অপহরণ করে শালবনে এনে লুকিয়ে রেখেছে।
২. শাহেদ নামের ছেলেটি জ্ঞান হারিয়েছে।
৩. বাবা খুব অসুস্থ।
৪. ব্যাগ পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে।
৫. নষ্ট বাসটি পূর্বের স্থানে নেই।
সমাধান:
১. শালবন থেকে বের হয়ে আসা অপহরণকারীদের গাড়ির নাম্বার লিখে নেব যাতে তা পরবর্তীতে পুলিশকে জানাতে পারি।
২. পুকুর থেকে পানি নিয়ে শাহেদের জ্ঞান ফিরাব।
৩. শাহেদকে নিয়ে বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে সেখান থেকে রিকশায় করে থানায় গিয়ে ৮ জন শিশু অপহরণের ঘটনা জানাব এবং অপহরণকারীদের গাড়িটির নাম্বার পুলিশকে দিব। পুলিশ অপহরণকারীদের গ্রেফতার করে শিশুদের উদ্ধারের ব্যবস্থা করবে। শাহেদ অসুস্থ হয়ে থাকলে তাকে হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করব।
৪. বাসস্ট্যান্ডে এসে রাস্তায় নষ্ট হওয়া বাসটি খুঁজে বের করব এবং তা থেকে আমার ব্যাগটি খুঁজে নিব।
৫. বাসস্ট্যান্ড থেকে রিকশা নিয়ে বাড়ি যাব।
৬. বাড়ি গিয়ে বাবার ঔষধ, রক্ত দেয়া ও তার প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা করে আমার সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষার আগের দিনই বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌছে যাব এবং পরের দিন পরীক্ষায় অংশ নেব।